রামপুরহাট: অবশেষে ঘরে ফিরলেন মিহিলাল শেখ ও তাঁর পরিবার। পুলিসি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে তাঁদের বুধবার ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার সকাল থেকে বগটুই গ্রামের একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছেন অফিসাররা৷ পরপর পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়৷ এরই মধ্যে প্রায় ১০ দিন পর পুলিসি নিরাপত্তায় সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি গোপালজোল গ্রাম থেকে বগটুই গ্রামে ফিরলেন রামপুরহাট গণহত্যাকাণ্ডে নিহতদের পরিবার। রাজ্য তথা বীরভূম জেলা পুলিসের সহযোগিতায় মিহিলাল শেখ ও তাঁর পরিবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম ফিরলেন।
মিহিলাল সহ চারজন কুমাড্ডা গ্রামে আত্মীয়র বাড়িতে এলেন। রামপুরহাট এসডিপিও (SDPO) ধীমান মিত্র গিয়ে কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। কুমাড্ডা গ্রামে নিহত নাজেমা বিবির মেয়ে সাজেনা খাতুনের বাড়িতে এলেন তাঁরা। নিজেদের বাড়ি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবেন মিহিলাল ও তাঁর পরিবার। মোট ১১ জন এই বাড়িতে থাকবেন। এসডিপিও ধীমান মিত্র বলেন, এদিন মিহিলাল শেখ ও শেখলাল শেখ ঘরে ফিরলেন। গ্রামে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। যাঁরা এখনও ঘরছাড়া রয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও ধীরে ধীরে ভয় কাটছে। সকলের জন্যই ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে পুলিসের তরফে।
আরও পড়ুন: Halisahar Bombing: হালিশহরে তৃণমূল উপপ্রধানের বাড়িতে বোমাবাজি
ঘরে ফেরা নিয়ে মিহিলাল শেখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন। মিহিলাল বলেন, এই পর্বে মুখ্যমন্ত্রী যা যা বলেছেন, তার সবই পেয়েছেন তাঁরা। জেলা পুলিস ও প্রশাসনও তাঁদের সবরকমের সহযোগিতা করেছে। এর জন্য তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি এও বলেন, পুলিস এখন তাঁদের পাশে রয়েছে। তাই সেই আতঙ্ক আর নেই। গ্রামে নিজেদের ঘরদোর পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে, তাই আপাতত বগটুইয়ে ফিরে আত্মীয়বাড়িতে আশ্রয় নেবেন তাঁরা।
২১ মার্চ তৃণমূলের উপপ্রধান খুনের পর রাতে পরপর ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই রাত থেকেই আতঙ্কে ঘরছাড়া ছিলেন মৃতদের পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বগটুই এসে মৃতদের পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়ার দিনই মিহিলাল শেখরা তাঁর কাছে ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রীও জেলা পুলিসকে নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের গ্রামে ফেরানোর এবং ঘর তৈরিসহ জানমাল রক্ষা করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: Rampurhat Violence: ১০ দিন পর পুলিসি ঘেরাটোপে বগটুইয়ে মিহিলাল, মমতার প্রতি কৃতজ্ঞ
কিন্তু, তারপরও ভয়ে গ্রামে ফিরতে চাইছিলেন না মিহিলালরা। এমনকী সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পরও তারা যখনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে, তখনও মিহিলাল একা যেতে রাজি হননি। এই তদন্তের অন্যতম সাক্ষী মিহিলালকে সিবিআই নিজেদের গাড়িতে নিয়ে গিয়েছে এবং গ্রামে ফিরিয়ে দিয়েছে।
গত সোমবার তাঁদের পরিবারের আরও এক মহিলার মৃত্যু হয় হাসপাতালে। ৬০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় তিনি ভর্তি ছিলেন রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে। তারপর থেকেই মিহিলালরা চাইছিলেন যাতে গ্রামে ফেরা যায়। সেই মতো এদিন পুলিসি নিরাপত্তায় বগটুইয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায় পুলিস।