সুন্দরবন: জনপ্রিয় স্প্যানিশ সিরিজ ‘মানি হাইস্ট’-এর মুখোশ এবার সুন্দরবনের জঙ্গলে। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে দু’বছর পর সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ শুরু করলেন মউলরা। গভীর জঙ্গলে বন্য জীবজন্তু, বিশেষত বাঘের চোখ চোখ এড়াতে মউলরা এবার বেছে নিলেন সালভাদোর দালির মুখের আদলে সেই বিশেষ মুখোশ। ‘মানি হাইস্ট’ সিরিজের পর যেই মুখোশ নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে।
করোনা সংক্রমণের জেরে ২০২০ সালে মধু সংগ্রহের অনুমতি দেয়নি বন দফতর। গত বছর অনুমতি দেওয়া হলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বহু মৌচাক নষ্ট হয়ে যায়। প্রায় খালি হাতেই ফিরে আসতে হয় মউলদের। গত শুক্রবারেই মধু সংগ্রহের অনুমতি দেয় বন দফতর। ইতিমধ্যেই বহু সংগ্রহকারী পৌঁছে গিয়েছেন জঙ্গলে।
মধু সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করেন মউলরা। বাঘের হাত থেকে বাঁচতে মাথার পিছনে নানান ধরনের মুখোশ পরেন তাঁরা। এতদিন ডাকাত, রাক্ষস কিংবা বাঘের মুখোশ পরলেও এবার দেখা গেল অন্য ছবি। দালির জনপ্রিয় মুখোশ বেছে নিয়েছেন মউলরা। রয়েছে আরও বেশ কিছু নিয়মকানুন। মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে মউলরা একত্রিত হয়ে মা বনবিবির পুজো করেন। জঙ্গলে তাঁরা যাতে কোনও বিপদে না পড়েন সেই কারণেই এই পূজোর আয়োজন করা হয়। তারই সঙ্গে মউলদের স্ত্রীরাও বেশ কিছু নিয়ম মানেন। যতদিন মউলরা ফিরে না আসেন, ততদিন বিধবার বেশে থাকেন তাঁরা।
মানি হাইস্ট সিরিজের মুখোশ পরে মধু সংগ্রহ করছেন মউলরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
গত বছরের তুলনায় এবছর অনেকটাই বেড়েছে মধু সংগ্রহকারীর সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি রেঞ্জ ও বসিরহাট রেঞ্জ থেকে মোট ৪৩ টি দলকে অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। প্রতিটি দলে ৫ থেকে ১১ জন করে মউল রয়েছেন। মোট ৩৪০ জন মউল দলে ভাগ হয়ে মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন। অনেকেই রওনা দিয়েছেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে। প্রাথমিক ভাবে ১৫ দিনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এই সময়ে সংগৃহীত মধু বন দফতরের কাছে জমা দিয়ে আবারও দ্বিতীয় বারের জন্য মধু সংগ্রহ করতে রওনা দেবেন মউলরা।
আরও পড়ুন: NCB Kolkata: বড়বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার এনসিবির, গ্রেফতার ৪