কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: স্বামী শিবানন্দ (Swami Sivananda)। বয়স ১২৬ (Yog Sevak) । যোগ শাস্ত্রে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সোমবার পদ্ম পুরস্কার (oldest Padma award winner) দেওয়া হল তাঁকে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য মোট ১২৮ জনকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করা হয়৷ কিন্তু সকলের মাঝে পদ্ম পুরস্কার নিতে গিয়ে ১২৫ বছরের স্বামী শিবানন্দের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়৷
কারণ,পুরস্কার গ্রহণের আগে তাঁর মুদ্রা দেখে সকলে উচ্ছ্বসিত। যোগগুরুর সামনে মাথা নোয়ান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ((Prime Minister Narendra Modi) , রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ram Nath Kovind) ৷ তার আগে যোগগুরু নিজেই কয়েক মিনিটে বেশ কয়েকবার সকলের সামনে নতজানু হন। এত অবলীলায় কীভাবে তিনি কার্পেটে হাঁটু মুড়ে, মাটিতে মাথা ঠেকালেন, তা দেখে তাজ্জব সকলে। আর ঠিক একারণেই ভাইরাল হয় তাঁর ভিডিয়ো৷
যোগে ব্যস্ত স্বামী শিবানন্দ৷
তাঁর অতি সাধারণ জীবনই ১২৬ বছর বয়সেও তাঁকে রোগমুক্ত ও চাঙ্গা রেখেছে ৷ নিয়মিত ভোরে যোগাসন, তেল ছাড়া সেদ্ধ খাবার খাওয়া আর মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করা – এটাই হল তাঁর রুটিন ৷ দীর্ঘায়ুর কারণের তালিকায় আরও একটি বিষয়, তিনি প্রথম থেকেই সেক্স থেকে দূরে রয়েছেন৷
পাসপোর্ট হাতে স্বামী শিবানন্দ৷
সংবাদ সংস্থা এএফপি-তে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, স্বামী শিবানন্দ অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন৷ পাঁচ ফুট দু’ইঞ্চের মানুষটা মাদুরে মেঝেতে ঘুমান৷ কাঠের বালিশে মাথা রেখে৷ তিনি এএফপিকে জানান, ‘‘আমি দুধ এবং ফল খাইনা৷ কারণ, এগুলি আমার কাছে বিলাসিতা বলে মনে করি৷ ছোট বেলায় বহুদিন না ঘুমিয়ে কেটেছে আমার৷’’ তিনি শারীরিক ভাবে সক্ষম৷ কোনও রকম অসুস্থতাও নেই৷ তিনি স্বাধীন ভাবেই বাঁচেন৷ একাই ঘোরাফেরা করেন৷
ঘরে বসে স্বামী শিবানন্দ৷
স্বামী শিবানন্দের বর্তমান ঠিকানা বেনারস, অসিঘাটের কাছে কবীর নগরে। পাসপোর্ট থেকে শুরু করে আধার কার্ড সবেতেই জ্বলজ্বল করছে জন্মতারিখ ৮ আগস্ট, ১৮৯৬। সরকারি নথিকে মান্যতা দিলে গতবছর আগস্টে ১২৫ পেরিয়েছেন শিবানন্দ বাবা। তাঁর জন্ম ১৮৮৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, তামিলনাড়ুর তিরুনাভেলি কাছাকাছি পত্তামদাইর কুপ্পুস্বামীতে। ১৮৯৬ সালে তিনি কাশী পৌঁছেছিলেন। গুরু ওমকারানন্দের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি যোগ ও ধর্মে একজন মহান ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পান।
আরও পড়ুন- Pradeep Mehra Viral video: মধ্যরাতে নয়ডার পথে দৌড়চ্ছেন প্রদীপ, কারণ জানলে বিস্মিত হবেন!
১৯২৫ সালে তিনি বিশ্বভ্রমণ শুরু করেন। ২৯ বছর বয়সে তিনি লন্ডনে যান। এরপর টানা ৩৪ বছর ধরে ভ্রমণ চালিয়ে যান। আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ইত্যাদি দেশ ঘুরে যখন তিনি দেশে ফিরেছিলেন তখন ভারত ৯তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করছিল। এরপর থেকেই দীর্ঘ অধ্যাবসায় ও আত্মত্যাগে ভারতের যোগশাস্ত্রকে বিশেষ মাত্রায় পৌঁছে দেন তিনি। নিয়মিত শরীরচর্চা ও অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে পেয়েছেন সুস্বাস্থ্য, হয়েছেন দীর্ঘায়ু। এখনও তিনি ব্রহ্মচর্যের নিয়ম মেনে চলেন।