শান্তিপুর: ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধের চাপ, সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। এমনই অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাতভাই পাড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম কিসমত শেখ, বয়স ৬২ বছর। পরিবারের অভিযোগ, ওই বৃদ্ধকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ লাগাতার হুমকি দিচ্ছিল। সেই আতঙ্কে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন কিসমত। ক্রমাগত ব্যাঙ্কের তরফে চাপের কারণেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁত বুনে পাঁচ মেয়ের বিয়ে দেন কিসমত। লকডাউনের আগে এক মেয়ের বিয়ের জন্য এক বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা ঋণ নেন। ইতিমধ্যে ৬০ হাজার টাকার বেশি শোধও দিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র কয়েকটি কিস্তি বাকি থাকার কারণে প্রায়শই বাড়িতে এসে অপমানসূচক কথা বলত ব্যাঙ্কের ঋণ আদায়কারী লোকজন। মৃত বৃদ্ধের ছেলে বাপন রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল বাবা অসুস্থ। কিছুদিনের মধ্যেই বকেয়া চারটি কিস্তি শোধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু তাও কথা শোনেনি তারা।
সোমবার প্রথমে দুপুর ১২টা নাগাদ একবার এসে পুলিসের ভয় দেখিয়ে চলে যায় কয়েকজন। পরবর্তীতে আবারও বিকেলের দিকে চারজন এসে বৃদ্ধ কিসমতকে অপমান করতে থাকে। তখনই ওই বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তা দেখে তারা ফিরে যায়। এরপর অসুস্থ ওই বৃদ্ধকে শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে শেষ রক্ষা আর হয়নি। মারা যান তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, লোনের টাকা শোধ করে দেওয়া হবে কিন্তু মৃত ব্যক্তিকে কি জীবিত করতে পারবে ব্যাঙ্ক? ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যদের কিছু না বলেও ওই বৃদ্ধকেই বারবার অপমান করতেন ব্যাঙ্কের ঋণ আদায়কারী লোকজন। মৃতদেহ নিয়ে এলাকাবাসীরা ওই ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভে বসেন। ঘটনা সামাল দিতে শান্তিপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিসের মধ্যস্থতায় পরে বিক্ষোভ উঠে যায়। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।