কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: স্নাতক হওয়ার পর হোটেল সেক্টরে প্রায় মাস আটেক মার্কেটিং এক্সিকিউটিভের কাজ করেছিলেন কে কে। কিশোর কুমারকে মনেপ্রাণে গুরু মানতেন। প্রথাগত কোনও কণ্ঠশিল্পীর কাছে সঙ্গীতের তালিম নেননি। তাতেও কেকে’র ঈশ্বরদত্ত গলার জাদু তাঁকে মেঘের রাজ্যে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আর সেখানেই শেষমেশ হারিয়ে গেলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ।
আরও পড়ুন: KK Death: কে কে’র মৃত্যু ঘিরে একাধিক প্রশ্ন, হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিস
কেকে’র জন্ম ২৩ অগস্ট, ১৯৬৮। কেরলের ত্রিচুরে জন্ম। বাবার নাম সি এস নায়ার, মার কনকাবল্লি। বড় হওয়া এবং পড়াশোনা সবই দিল্লিতে। ছোট থেকেই প্রেম জ্যোতি কৃষ্ণের সঙ্গে। বাল্যপ্রেমই মালাবদলে পরিণতি পায় ১৯৯১ সালে। কেকে’র দুই ছেলে-মেয়ে। তাঁর ছেলে নকুল কেকে’র সঙ্গেই হামসফর অ্যালবামে গান গেয়েছেন। মেয়ে তামারা মডেলিং করেন।
কেকে ভারতীয় প্রায় সব ভাষাতেই গান গেয়েছেন। প্রথম জীবনে বিজ্ঞাপনের জিঙ্গলস গাওয়াই ছিল তাঁর একমাত্র রোজগার। মুম্বইয়ে পা রেখে তিনি যোগাযোগ করেন সেই সময়কার বিজ্ঞাপন জগতের জিঙ্গলসের কিংবদন্তি সুরকার লুই ব্যাঙ্কস ও লেসলি লুইয়ের সঙ্গে। তাঁদের সান্নিধ্যে আসার পরই বরাত খুলতে শুরু করে কেকে’র। সারা জীবনে অন্তত ৩৫০০ জিঙ্গলস গেয়েছেন কেকে। এ আর রহমান তাঁকে প্রথম দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে পরিচয় করান দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে গান গাইয়ে। এরপর হাম দিল দে চুকে সনম ও দেশবিখ্যাত গুলজারের ছোড় আয়ে হাম গানের পর কেকে’কে আর ধরে রাখা যায়নি। একের পর এক বিখ্যাত-হিট ছবির গান চলে এল তাঁর ঝাঁপিতে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: গান স্যালুট কেকে-কে, সম্ভব হলে আমিও থাকব: মমতা
এছাড়াও, রাইজ আপ— কালার্স অফ পিস নামে আন্তর্জাতিক শিল্পীদের নিয়ে একটি অ্যালবাম বেরয় ২০১৩ সালে। যে অ্যালবামে তুরস্কের কবি ফতেউল্লা গুলেনের লেখা কয়েকটি গান ছিল। ১২টি দেশের শিল্পীরা ওই অ্যালবামে গেয়েছিলেন। কেকে গেয়েছিলেন রোজ অফ মাই হার্ট গানটি। প্রখ্যাত ড্রামবাদক ক্রিস পাওয়েল বলেছিলেন, কেকে যতই নেপথ্য সঙ্গীত শিল্পী হন না কেন, বাস্তবে অন্তর থেকে তিনি একজন রকস্টার। প্রকৃতই ভালোবাসার মরুভূমি থেকে গোলাপ তুলে এনে প্রেয়সীর হাতে তুলে দেওয়ার যে পণের কথা তিনি তাঁর গানে শুনিয়েছিলেন, সেই মরুভূমিতেই অগণিত ভালোবাসার ঝড়ের মুখে হারিয়ে গেলেন কেকে।