দু’হাত উজাড় করে প্রকৃতি আজও আমাদের সমৃদ্ধ করে চলেছে। কিন্তু আধুনিক জীবনশৈলীর অছিলায় আমরা ভুলে থেকেছি প্রকৃতির এই দান। আর যতটা আমরা পেয়েছি তাঁর সিকিভাগও যদি প্রকৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিতে পারি তা হলে লাভ সেই আমাদেরই। প্রয়োজন সজাগ থাকা। প্রত্যেক বছর এই সজাগ থাকার বার্তাই বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ার্ল্ড নেচার কনজারভেশন ডে! সুস্থ্ স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সুস্থ পরিবেশ যে অপরিহার্য! এই লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রয়োজন প্রতিটা মানুষের সজাগ হওয়া। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটা সুন্দর, দুষণমুক্ত পৃথিবী উপহার দিতে নিত্যদিনের জীবনযাপনের এই বিষয়গুলো পারলে মেনে চলুন।
১. প্লাস্টিক বর্জন- গোটা পৃথিবীর শ্বাসরুদ্ধ করে দিচ্ছে প্লাস্টিক দূষণ। বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকায় যেখানে বর্জ্যপদার্থ নিকাশির সঠিক ব্যবস্থা নেই, সেখানে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। তাই যতটা সম্ভব সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক বর্জন করুন। প্লাস্টিকের স্ট্র বা বাসনপ- সহ অন্যান্য জিনিসপত্রের বদলে বেছে নিন বাঁশের বা অন্যান্য ধাতুর তৈরি জিনিসপত্র। প্লাস্টিক ব্যাগের বদলে কাপড় বা জুটের ব্যাগ ব্যবহার করুন।
২. সাসটেনেবেল ডায়েট- খাবারে মাধ্যমে বা সঠিক ফুড চয়েসের মাধ্যমেও যে পরিবেশকে বাঁচানো সম্ভব তা আমরা অনেকেই জানি। খাবার যদি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বা খাওয়া না হয়, তা হলে কার্বন ফুটপ্রিন্টের মাত্রা বা প্রকৃতিতে ক্ষতিকারক গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে ফলমূল- শাকসবজি খেলে পরিবেশ ভাল থাকবে। এই কার্বন ডাইঅক্সাইড কমানো মানে পুরোপুরি নিরামিষ খাবার খাওয়া। তবে এই বিষয়টি নিঃসন্দেহে বিতর্কিত বিষয়। পরিবেশকে সুস্থ রাখার আরও উপায় রয়েছে।
৩. আপনার বাড়িতে জলের অপচয় হচ্ছে কি না, সেই দিকে নজর দিন। এবং অপচয় হলে তা বন্ধ করুন। বাড়িতে খারাপ জলের নল থাকলে মেরামত করিয়ে নিন। এই বিষয়ে অধিকাংশ মানুষ নজর দেন না। অল্প জামাকাপড়ের জন্য ওয়াশিং মেশিন চালানো বা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত জল ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। বাচ্চারা সাধারণত জল নিয়ে খেলতে খুব ভালবাসে। বাড়ির ছোটদের বোঝান সমস্যার কথা৷ তারা নিশ্চয় বুঝবে এবং সজাগ থাকবে।
৪. বাড়িতে বিদ্যুৎ অপচয় হতে দেবেন না। আলো, পাখা ও একাধিক ইলেকট্রনিক্সের সরঞ্জাম ব্যবহারের পর মনে করে সুইচ অফ করে দিন। বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করলে তার ভাল প্রভাব পড়বে পরিবেশের ওপরও।
৫. রিসাইকেল ও রিইউজের বিষয়টা নিয়ে ভাবুন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কেনার ক্ষেত্রে এমন জিনিস বাছুন যা টেকসই ও বহুবার ব্যবহার করা যাবে। যেমন রান্নাঘরের জন্য রিইউজেবেল কৌটো ও অন্যান্য বাসনপত্র, জলের বোতল ইত্যাদি।
৬. ই ওয়েস্ট, ক্রমশ বেড়ে উঠছে এই ই ওয়েস্টের সমস্যা। চায়না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বে সবথেকে বেশি ই-ওয়েস্ট সৃষ্টি করছে ভারত। আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজের মন মতো নিত্যনতুন আধুনিক সরঞ্জামের দিকে ছুটে চলেছে মানুষ। পড়ে থাকছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-সহ আরও কত কী, ই-ওয়েস্টের বেড়েই চলেছে। কোনও নতুন কিছু কেনার প্রয়োজন আদৌ আছে কি না, তা নিয়ে ভাবুন৷ আর কেনার তাগিদ যদি প্রবল হয় তাহলে রিসাইকেল বা রিইউজ কীভাবে হবে সেটা দেখে নিন।
৭. বাড়িতে বাগান করুন, গাছপালা লাগান। পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ ও সার বাড়িতেই তরিতরকারির খোসা দিয়ে বানিয়ে নিন। নারকলের মালাই থাকলে তাতে গাছ লাগাতে পারেন। এতে বাড়ির পরিবেশও ভাল থাকবে।