না, মঙ্গলবারের ইস্ট বেঙ্গলের কার্যকরী সভাও জট কাটাতে পারল না। ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব সিদ্ধান্ত নিতে পারল না তারা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে এগ্রিমেন্টে সই করবে কি না। তবে সিদ্ধান্ত হল, ইনভেস্টরের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে জট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর সময় চাওয়া হবে। তাঁর দেওয়া সময় অনুযায়ী ক্লাবের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ইতিকর্তব্য ঠিক করবে।
গত কদিন ধরে ইস্ট বেঙ্গল ও শ্রী সিমেন্টের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে জট কাটার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে যখন প্রাক্তন সচিব পার্থসারথি সেনগুপ্তের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করা হয় এবং তিনি সে ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখান, তখন মনে হয়েছিল সমস্যার সমাধান হয়তো হতে চলেছে। পার্থ বেশ কয়েকটি সংশোধনী করেছেন এগ্রিমেন্টের ক্লজে। এবং সেটা তিনি করেছেন ক্লাব এবং শ্রী সিমেন্টের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সে সব সংশোধনীগুলি প্রকাশিতও হয়ে যায়। এরই মধ্যে সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য ক্রীড়া দফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন ক্লাবকে ফুটবল বিতরণের সভায় মুখ্যমন্ত্রী খুবই দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, “ইস্ট বেঙ্গলের সমস্যা মিটতে চলেছে। ইস্ট বেঙ্গল আই এস এল খেলবে।” সেখানেই তিনি ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, :একটু ছেড়ে খেলতে হবে। যারা পাঁচ বছরের জন্য বছরে ৫০ কোটি টাকা খরচ করবে তাদের কথাও তো ভাবতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভা ডাকা হয় মঙ্গলবার।
কিন্তু সেই সভা এগ্রিমেন্টে সই করার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারল না। কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া গেল না জানতে চাওয়ায় সভায় উপস্থিত কার্যকরী কমিটির এক সদস্য বললেন, ” যে সংশোধনীর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো তো আমাদের কাছে শ্রী সিমেন্ট পাঠায়নি। ওরা যদি আমাদের কাছে সেগুলো না পাঠায় তাহলে কার ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে এগ্রিমেন্টে সই করব। ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। কলকাতা লিগের ঘন্টা বেজে গেছে। এখনও টিম হয়নি আমাদের। তাই আমরা ঠিক করলাম মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব। ”
এ ব্যাপারে শ্রী সিমেন্ট ইস্ট বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সি ই ও শিবাজি সমাদ্দার বলেন, “ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই খবর আমরা এখনও পায়নি। তবে গতকাল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে তো আমরা আশাবাদী যে জট কাটতে চলেছে। আমি যতদূর জানি পার্থ সেনগুপ্তের সংশোধনীগুলো দুই পক্ষই মেনে নিয়েছে। এখন সেগুলোর দায়িত্বে আছে শ্রী সিমেন্টের আইনি বিভাগ। ওরা কী করেছে সেটা তো আমি জানি না।”
যা অবস্থা তাতে এখন মুখ্যমন্ত্রীই ভরসা দু পক্ষের। তিনিই গত বছর শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের সংযুক্তির ঘটক। কিন্তু এক বছর পর সেই সম্পর্কে এখন বিশাল জট। এখন তিনিই ভরসা ইস্ট বেঙ্গলের। কদিন আগে ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাতেই শীলমোহর দিল লাল হলুদের কার্যকরী কমিটি। এখন ময়দানের অপেক্ষা কবে জট কাটানো যাবে তা নিয়ে।