দুর্গাপুর: গত দু’তিন মাস ধরে দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘোরাঘুরি করছিল একটি সাদা এবং একটি খয়েরি রঙের ঘোড়া। কখনও দুর্গাপুর বিধাননগর, কখনও ইস্পাত নগরীর বিভিন্ন অঞ্চল, সিটি সেন্টার, কখনও বা এমএএমসি কলোনি এলাকায়। কেউ কেউ ভালোবেসে খাবার দিচ্ছিলেন। কিন্তু ভরপেট খাবার না পেয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এই অসহায় ঘোড়া দুটি।
এদের মালিকের খোঁজখবরও পাওয়া যাচ্ছিল না। বোঝাই যাচ্ছিল যে ঘোড়া দুটি কিনে তাদের মালিক পর্যাপ্ত খাবারের জোগান দিতে না পারায় রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় ক্লান্ত হয়ে ঘোরার পর ঘোড়া দুটি চলে আসে দুর্গাপুরের দামোদর লাগোয়া ডিপিএল কলোনিতে।
আরও পড়ুন: Ashish Mishra: লখিমপুরকাণ্ডে আশিস মিশ্রের জামিন বাতিল
এই কলোনির একটি প্রাচীন স্কুল ডিপিএল বয়েজ হাই স্কুল। ওই স্কুলের সাতের দশকের ব্যাচের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেইখানে পুরনো ছাত্রদের মধ্যে একজন ছবিটি আপলোড করেন গ্রুপে। তখনই গ্রুপের একজন সদস্য বাপ্পাদিত্য ধর, যিনি প্রাক্তন সামরিক কর্মী, তিনি তাদের লালন-পালন করার ইচ্ছে প্রকাশ করে দ্বারস্থ হন পশুপ্রেমী সংগঠনের।
পশুপ্রেমী সংগঠনের তরফ থেকে দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়। ঘোড়াটিকে দেখভালের জন্য মহকুমা শাসক সম্মতি দিলে এই পশুপ্রেমী সংগঠনের সহযোগিতায় বাপ্পাদিত্য ধরের বাড়িতে আশ্রয় পায় ঘোড়া দুটি। পয়লা বৈশাখের দিন বাড়িতে আনার জন্য মেয়ে ঘোড়াটি, যার গায়ের রং সাদা, তার নাম রাখা হয়েছে বৈশাখী এবং খয়েরি রঙের পুরুষ ঘোড়াটির নাম রাখা হয়েছে পয়লা।
আরও পড়ুন: Weather Forecast: গরমে হাঁসফাঁস রাজ্যবাসীর, বেশকিছু জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা
দুটি ঘোড়ার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য পশু চিকিৎসক নিয়ে আসা হয়। তিনি তাদের শারীরিক পরীক্ষা করেন এবং কী খাবার খাওয়াতে হবে, কতটা পরিমাণে এবং ওষুধ সমস্ত কিছু বলে যান। এরপর থেকে ডিপিএল কলোনির বাপ্পাদিত্য ধরের বাড়িতে আদর-যত্নে, নিশ্চিন্তে বসবাস করছে অশ্ব-দম্পতি পয়লা-বৈশাখী।