কিভ: যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আগে ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, গায়ের জোরে ইউক্রেন দখল করা রাশিয়ার উদ্দেশ্য নয়। তাঁর লক্ষ্য, ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ। প্রতিবেশী দেশকে ‘নাৎসি’ মুক্ত করে ইউক্রেন সরকারের নির্যাতন ও গণহত্যার হাত থেকে মানুষজনকে রক্ষা করা। কিন্তু, প্রায় একমাস ধরা চলা যুদ্ধের পর ইউক্রেনের যে ছবি বিশ্বের সামনে এসেছে, তাতে পালটা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের একের পর এক শহর গুঁড়িয়ে দেওয়া শুধু নয়, থিয়েটার হল, আঁকার স্কুলের মতো শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রগুলিও ধূলিস্মাৎ করে দিয়েছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। তার পরেও ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিভ কিন্তু পুতিনবাহিনীর কাছে অধরাই। ২৬ দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়েও মধ্য কিভ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি রুশসেনা।
ব্রিটেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেনতেন প্রকারে কিভ শহর দখলই রাশিয়ার সামরিক কৌশল। সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের রাজধানী শহরটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে চায় পুতিনবাহিনী। লক্ষ্য হাসিল করতে সামনের দিনগুলিতে কিভে আরও জোরদার রুশ হামলা চলবে বলেই মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা।
আশঙ্কা যে অমূলক নয়, সোমবার কিভের উত্তরে লাগাতার হামলা চালিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের কড়া প্রতিরোধের মুখে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। মধ্য কিভ থেকে এখনও ২৫ কিলোমিটার দূরে রুশ বাহিনী। ব্রিটেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের খবর অনুযায়ী, আর না-এগিয়ে বিগত প্রায় দু-সপ্তাহ ধরে এখানেই অপেক্ষা করছে পুতিনবাহিনী। সমর বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন, ইউক্রেনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এটা রাশিয়ার সামরিক কৌশলের অংশ।
3/3 Despite the continued lack of progress, Kyiv remains Russia’s primary military objective and they are likely to prioritise attempting to encircle the city over the coming weeks.
— Ministry of Defence 🇬🇧 (@DefenceHQ) March 21, 2022
তবে, ইউক্রেনীয় বাহিনীকেও খাটো করে দেখার উপায় নেই। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও তারিফ করেছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেছেন, স্থলযুদ্ধে রুশসেনা যে ভাবে প্রতিরোধের মুখে পড়েছে, তাতে বোঝা যায় যুদ্ধের পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না রাশিয়ার।
আরও পড়ুন:Breaking News: ১৩৩ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ল চীনা বিমান
যুদ্ধ জারি থালেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এখনও সমঝোতার আশা করছেন। এর মধ্যে কয়েক বার শান্তি বৈঠক ব্যর্থ হলেও মীমাংসার পথে যেতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু ক্রেমলিনের তরফে বেশকিছু আগাম শর্ত চাপিয়ে রাখা হয়েছে। এমত অবস্থায় আদৌ রফাসূত্র বেরোবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্ব। জেলেনস্কির আশঙ্কা, রফাসূত্র না-বেরোলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি কিছুটা নমনীয় হতে পারেন। তবে, জেলেনস্কি এখনও মনে করেন, মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরেও রাশিয়ার কিভ দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। এটা ধারণা নয়, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানের আত্মবিশ্বাস।