নয়াদিল্লি: যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন এক ২৪ বছরের যুবতী৷ তিনি বিমান চালক মহাশ্বেতা চক্রবর্তী৷ কলকাতার বাসিন্দা৷ ৬টি বিমান চালিয়ে গত কয়েকদিনে ৮০০ পড়ুয়াকে দেশে ফিরিয়েছেন৷ মহাশ্বেতা চক্রবর্তী গত চার বছর ধরে এক বেসরকারি বিমান সংস্থায় পাইলট পদে চাকরি করছেন৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধ ঘোষণার তিন দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত বিমানগুলি চালিয়েছেন৷
মহাশ্বেতা সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘‘এটি আমার আজীবনের অভিজ্ঞতা৷ কিশোর বয়স থেকে যৌবনের পথে পা বাড়ানো পড়ুয়াদের ঘরে ফেরানোর অভিজ্ঞা৷ যাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল৷ যারা বেঁচে থাকার মরিয়া হয়ে উঠেছিল৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এয়ারবাস এ৩২০ বিমান দিনে টানা ১৩-১৪ ঘণ্টা চালিয়েছি৷ যেটা পড়ুয়াদের আতঙ্ক ও ঘরে ফেরার তাড়নায় কাছে কোনও ব্যাপার নয়৷ তাঁদের ঘরে ফেরাই বড় ব্যাপার৷’’
মহাশ্বেতা একটি ঘটনার কথাও স্মরণ করেন৷ যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া এক ২১ বছর বয়সী মেয়ে মানসিক বিপর্যয়ের কথা বলছিলেন৷ মহাশ্বেতার কথায়, আমি সেই মুহূর্তটি কখনই ভুলব না৷ যখন মেয়েটি অর্ধ-সচেতন অবস্থায় আমার হাত চেপে ধরে করুণ আর্তি জানায়৷ সে আমাকে শুধু তার মায়ের কাছে নিয়ে যেতে বলেছিল৷’’
মহাশ্বেতা অপারেশন গঙ্গায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন৷ ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ঘরে ফেরাতে ২৬ ফেব্রুয়ারি অপারেশন গঙ্গা শুরু হয়৷ ভারতীয় বায়ুসেনাও অপারেশন গঙ্গায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে৷ পাশাপাশি এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো স্পাইসজেট অংশ গ্রহণ করেছিল৷
আরও পড়ুন- Ukraine-Russia Conflict: কিভ কি পতনের মুখে, ইউক্রেনের রাজধানী শহর ঘিরে ফেলছে রুশসেনা
মহাশ্বেতা বলেন, ‘‘আমি আমার এয়ারলাইন থেকে গভীর রাতে ফোন পাই৷ আমাকে বলা হয়েছিল যে, ভারতীয়দের উদ্ধার অভিযানের জন্য আমাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমি দুই ঘন্টার মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে চলে যায়৷’’
মহাশ্বেতা ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রীয় উড়ান একাডেমি থেকে স্নাতক৷ করোনা মহামারী চলাকালীন বন্দে ভারত মিশনের অংশ ছিলেন তিনি। বিদেশ থেকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর এবং কলকাতা এবং পুনে থেকে অন্যান্য বিমানবন্দরে ভ্যাকসিন পৌঁছতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করেন৷