আর্জেন্তিনা–৩ ইকোয়েডর–০
(রডরিগো দে পল, লওতারো মার্টিনেজ, লিওনেল মেসি)
শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনার মায়া কাটিয়ে তিনি অন্য কোনও ক্লাবের জার্সি গায়ে তুলবেন কি না তা নিয়ে ধন্দ থাকলেও লিওনেল মেসি বোঝাচ্ছেন, চৌত্রিশ বসন্ত পেরিয়েও তাঁর ফর্মে কোনও জং ধরেনি। শনিবার রাতে কোপা আমারিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকোয়েডরকে তিন গোলে হারাল মেসির দল। নিজে ফ্রি কিক থেকে একটি অনবদ্য গোল করলেন এবং বাকি দুটো গোল করালেন সতীর্থদের দিয়ে। মেসি ম্যাজিকেই কাত হয়ে গেল ইকোয়েডর। এটা এবারের কোপায় মেসির চতুর্থ গোল। দেশের হয়ে ৭৬টি গোল হয়ে গেল তাঁর। ছয় বারের ব্যালন ডি অর জয়ী মেসি এখনও কোনও বড় ট্রফি জেতেননি। এবার আর্জেন্তিনাকে তিনি যদি চ্যাম্পিয়ন করতে পারেন তাহলে কি সপ্তম ব্যালন ডি অর-টি তাঁর হাতে উঠবে? তবে তার আগে মেসিদের দুটো ম্যাচ জিততে হবে। সেমিফাইনালে ৬ জুলাই মেসিরা খেলবেন কলম্বিয়ার সঙ্গে, যারা এদিন টাই ব্রেকারে উরুগুয়েকে হারাল ৪-২ গোলে। নির্দ্ধারিত সময়ে ম্যাচে কোনও গোল হয়নি।
মেসির গোলটা ম্যাচের ৯৩ মিনিটে। বক্সের সামনে অ্যাঞ্জেলো মারিয়াকে ফাউল করলে রেফারি উইলটন সাম্পাইয়ো পেনাল্টি দেন। কিন্তু ভার জানিয়ে দেয় ফাউলটা হয়েছে বক্সের বাইরে। মেসি পেনাল্টির থেকে বেশি স্বছন্দবোধ করেন ফ্রি কিক মারতে। বল বসাবার সময় তাঁর মুখে হাসি ফুটে উঠল। শট মারার সময়ও তাই। এর পর বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে গোল। এ সব গোল দেখার জন্য অনেক মাইল হেঁটে আসা যায়। আসলে রাতটাই ছিল মেসির। শুরু থেকেই আর্জেন্তিনা মিডফিল্ড ঝাঁপিয়ে পড়ে গোল করার জন্য। কিন্তু লওতারো মার্টিনেজদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় ইকোয়েডর গোলকিপার হার্নান গালিন্ডেজের কাছে। শেষ পর্যন্ত ৪০ মিনিটে হার মানেন তিনি। মেসির পাস থেকে গোল করেন রডরিগো দে পল।
বিরতির পরেও আর্জেন্তিনা আক্রমণের ঝাঁঝ কমেনি। বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেও তারা গোল করতে পারেনি। অবশেষে ৮৪ মিনিটে এল দ্বিতীয় গোল। অ্যাঞ্জেলো দি মারিয়া বক্সের সামনে মেসিকে পাস দিলে তিনি সেটা বাড়িয়ে দেন লওতারো মার্টনেজের জন্য। ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার গোল করতে ভুল করেননি। কিন্তু তখনও মেসি ম্যাজিক শেষ হয়নি। সেটা হল ফ্রি কিক থেকে তাঁর গোল করার পর। এর একটু আগে (৯২ মিনিটে) ইকোয়েডরের পেদ্রো হিনকাপল লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে গেছেন। আর্জেন্তিনা কোপা জিতেছে ১৪ বার। শেষ বার ১৯৯৩ সালে। তার পর থেকে তাদের অভিযান শুধুই অধরা। এবার কি তাহলে খরা কাটবে? মেসির হয়তো এটাই শেষ কোপা। খালি হাতে তাঁকে কি ফেরাবেন ফুটবল ঈশ্বর?