‘দেখতে দেখতে কফি হাউসেই কেটে গেছে ৪০টা বছর। অন্য কিছু কাজ করার ইচ্ছা বা মানসিকতা নেই। আমরা যাব কোথায়? কফি হাউস না খুলে উপায়ে কী? নিজে না-খেয়েই থেকে যাব পরিবারের মুখে তো অন্ন জোগাতে হবে।’ চোখে জল নিয়ে কথা গুলো আওড়াচ্ছিলেন প্রবীণ রাধাকৃষ্ণ মিশ্র। সেই কোন ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে কলকাতায় এসে এই কফি হাউসে কাজ শুরু করেছিলেন। আর এখন তাঁর কণ্ঠেই কাতর সুর। গতবছরের লকডাউন। আর এ বছরের কোভিড বিধিনিষেধের জেরে জর্জরিত কফি হাউস। তাই ৩ ঘন্টার জন্য হলেও যেটুকু সময় খোলা থাকবে কিছুটা তো সুরাহা হবে। এই মনে করেই বুধবার থেকে খুলে গেল কফি হাউস। অন্তত কর্মীদের বেতন দেওয়ার বন্দোবস্ত করা যাবে বলেই জানালেন কর্তৃপক্ষ। নবান্নের নির্দেশ, সমস্ত কর্মচারীকে টিকা দিয়েই শুরু করতে হবে হোটেল রেস্তরাঁ। সেই মতো কিছু কর্মীর টিকাকরণ হয়ে গেছে। বাকিদেরও হয়ে যাবে বলেই জানালেন কর্তৃপক্ষ।
নতুন ভাবে খুলে অবশ্য মেনুতেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। পছন্দের মেনু না-পেলেও মন ভরানোর মেনু মিলবে। আপাতত ৩ ঘন্টার জন্য খোলা হবে। একটি টেবিলে ৪ জনের বেশি বসা যাবে না। এই সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই কফি হাউসে প্রবেশ করতে পারবেন আড্ডাপ্রিয় বাঙালি। কফি হাউসে প্রবেশের মুখে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। তবে বাস ট্রাম না-চলায় খোলার পরেও আড্ডাবাজরা আসতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে সন্দিহান কর্তৃপক্ষ।