নয়াদিল্লি: “হেড অফিসের বড়বাবু লোকটি বড় শান্ত, তার যে এমন মাথার ব্যামো কেউ কখনও জানত? …..ব্যস্ত সবাই এদিক-ওদিক করছে ঘোরাঘুরি-, বাবু হাঁকেন ওরে আমার গোঁফ গিয়েছে চুরি!”-সুকুমার রায়ের কবিতায় এই গোঁফ চুরি গিয়েছে মনে হওয়া নিয়ে বাবুর হইচই ফেলে দেওয়ার ঘটনার ছায়া এবার হিমাচলপ্রদেশ (Himachal Pradesh) রাজ্যে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনা সিঙাড়া (samosas) কেন চুরি গিয়েছে তা নিয়ে একেবারে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। দুঁদে গোয়েন্দারা নেমে পড়েন কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনা সিঙাড়া তাঁকেই বাদ দিয়ে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হল তার রহস্য উদ্ঘাটন করতে। তাছাড়া সদ্য অসুস্থতা থেকে ওঠা মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর না কি তেলের জিনিস খাওয়া বারণ। তাই কী থেকে কী হল তার তদন্ত দরকার ছিল। সেই তদন্ত রিপোর্টে না কি সরকার বিরোধী মানসিকতা থেকে এমনটা করা হতে পারে বলে তত্ত্ব উঠে এসেছে। ঘটনায় এক মহিলা সহ পাঁচ পুলিশ আধিকারিকের কাছে না কি শোকজ নোটিসও গিয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি। অথচ রাজনৈতিক সৌজন্য রক্ষা করতে সিঙাড়ার জুড়ি মেলা ভার ছিল। তুমুল প্রতিপক্ষ রাজনীতিবদরা এক টেবিলে সিঙাড়া সহযোগেই কোনও বিশেষ ঘটনার বিষয়ে একমত হতে আলোচনায় বসতেন এই উদাহরণ ছিল ভুরি ভুরি। কমরেড বিমান বসুদের অবশ্য নবান্নে সিঙাড়ার বদলে ফিশফ্রাই খাইয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও রাজনীতির আঙিনায় জীবন কাটিয়ে দেওয়া পক্ককেশ অনেকের অভ্যাসবশত বিকেলে মুড়ি সহযোগে সিঙাড়া না হলে চলে না। কিন্তু সেই সিঙাড়াই যে এবার আলোচনায় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসবে তা হয়তো অনেকে ভাবতে পারেননি।
জাতীয়স্তরের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত ২১ অক্টোবর হিমালচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু (Sukhvinder Singh Sukhu) সিআইডির সদর দফতর শিমলা গিয়েছিলেন সাইবার দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি নতুন ব্যবস্থার উদ্বোধনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সিঙাড়া, কেকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু, তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছয়নি, বরং তা দিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর নিরাপত্তাকর্মীদের। তাতেই উচ্চপর্যায়ের সিআইডি তদন্ত! একেবারে ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আধিকারিক এই তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। সেই রিপোর্টে সমন্বয়ের অভাব, সরকারি বিরোধী মনোভাবের কথা উঠে এসেছে। তাতে আরও হইচই পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের ছড়াছড়ি শুরু হয়েছে। সেখানকার কংগ্রেস সরকারের এই সিদ্ধান্তে সেখানকার বিজেপি টিপ্পনী কেটে বলেছে, মানুষ অনেক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। আর সরকার শিঙাড়ার খোঁজে তদন্ত করছে! শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে সরকারি দল যে বিবৃতিই দিচ্ছে তাতে এখন পাল্টা মিম তৈরি হচ্ছে। সেজন্য একসময়ের আইনি ছাত্র ওই মুখ্যমন্ত্রী না কি আপাতত এই ইস্যুতে স্পিকটি নট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে এনসি-কংগ্রেস জোট সরকার কতদিন স্থায়ী হবে?
দেখুন অন্য খবর: