নির্যাতিতার বাবা-মা এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, সেখানে বিচারের দাবি করেছেন, ওনারা বিচার পাচ্ছেন না, অমিত শাহ দেখা করেননি, ওনারা রাজ্যের দেশের মানুষজনদের ওনাদের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছেন। অন্তত গণশক্তিকে ওই নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়েছেন বিজেপির ভূমিকাতেও ওনারা খুশি নন। ক’দিন আগে চোখের জল মুছিয়ে দেওয়া শুভেন্দুর বা ওইখানেই কান্নায় ভেঙে পড়া বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি যাই বলুন না কেন ওনারা সিবিআই-এর তদন্তে খুশি নন, বলেছেন দক্ষ তদন্ত সংস্থা চেয়েছিলাম কিন্তু চার মাসেও কিছু হয়নি। এদিকে ওই পোস্ট নিয়ে কিছু মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, আমি নয়, এমনকী সিপিএম-এর পরিচিত সমর্থক লিখেছেন, “রাতারাতি কয়েক হাজারে পেজের লাইক সংখ্যা পৌঁছতে পারে না। যতদূর এই সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করার দৌলতে বুঝলাম যে পেজটি অন্য কোনও নামে ছিল। সেটিকে কেউ নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম দেয়। এবং প্রোফাইল ফটো ও অন্যান্য কিছু পরিবর্তন করে। আরেকটা তথ্য- একটা পেজের নাম চেঞ্জ করা যায় মিনিমাম ৬ মাস বাদে। তার মানে ওই পেজটি ৬ মাস কি তারও আগেকার পেজ। এখন সেটা কিঞ্জলরা খুলেছে নাকি বিরোধী ডাক্তাররা খুলেছে নাকি এদের আন্দোলনকে এগিয়ে বা পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ বা কারা করেছে সেটা প্রধান বিষয়।” মানে সন্দেহ আছে, কিন্তু যখন গণশক্তি লিখছে তখন সেটাকেই ভিত্তি করে কথা বলা যাক। ফেসবুক পেজটির নাম ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস, ভয়েজ অফ আরজি কর ভিক্টিম। এবং সেই পেজে ওনার বাবা মায়ের যে আবেদন তা খুব পরিষ্কার যে তাঁরা বিচার চাইছেন। তাঁদের মনে হয়েছে যে আসলে তাঁদের আত্মজর ধর্ষণ-খুনের বিচার হচ্ছে না। কেন এটা মনে হচ্ছে? কোন কারণে? কোন কোন গোপন তথ্য তাঁদের কাছে আছে যার ফলে, বা যার উত্তর না পাওয়ায় তাঁদের মনে হচ্ছে যে বিচার হচ্ছে না, তদন্ত হচ্ছে না? কোন বিচারে দাবিতে তাঁরা সারা দেশের মানুষকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে বলছেন? কাদের হাতে দেওয়া হবে সেই বিচারের দায়ভার? ডাঃ কিঞ্জল নন্দ বা ডাঃ অনিকেত মাহাতো নিশ্চয়ই তদন্ত করতে রাজি হবেন না, কারণ তাতে আরও অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে যা তাঁদেরই হজম হবে না। সে কথা থাক, কিন্তু ওনারা এই বিচার চাইছেন কিসের ভিত্তিতে তা জানাটা খুব জরুরি, কারণ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে হয় তাঁরা ভুল বুঝছেন, না হলে তাঁদের ভুল বোঝানো হচ্ছে, সেটাই বিষয় আজকে, তিলোত্তমার বাবা-মাকে হয় ভুল বোঝানো হচ্ছে, না হলে তাঁরা ভুল বুঝছেন।
কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল, মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছেন, প্রকাশ্যেই বলেছেন সাত দিনের মধ্যে কিনারা না করা গেলে এই তদন্তের ভার সিবিআইকে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই বিকাশ ভট্টাচার্য অ্যান্ড কোম্পানি আদালতে গিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করেন, কলকাতা শহরতলি উত্তাল হয়ে ওঠে বিচারের দাবিতে এবং তারপর থেকে এক মিথ্যের সুনামি দেখেছে এই বাংলার মানুষ যা আমরা বারবার দেখিয়েছি। এবং শেষমেশ কলকাতা পুলিশের যাবতীয় তদন্তে পাওয়া প্রমাণ সাক্ষ্য নিয়েই সিবিআই চার্জশিট পেশ করে, একটা এমন পয়েন্ট নেই যা কলকাতা পুলিশের তদন্তের বাইরে।
আরও পড়ুন: Aajke | ডাক্তারবাবুরা ৫ কোটি টাকার হিসেব দেবেন না
সেই চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচার শুরু হয়েছে, আরজি কর ভিক্টিমের বাবা গেছেন আদালতে সাক্ষ্য দিতে, সিবিআই জানিয়েছে তারা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেবেন, ওই অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বা টালা থানার ওসির এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে, তাঁরা এখনও তদন্ত চালাচ্ছেন। তো এগুলো হচ্ছে কী? এবং যদি এর বাইরে তাঁদের কাছে গোপন কোনও তথ্য থাকে, যদি এমন কোনও প্রমাণ থাকে যার ভিত্তিতে তাঁরা বলছেন যে তদন্ত হচ্ছে না, বিচার হচ্ছে না, তাহলে সেটা সামনে আনুন, পরিষ্কার করে বলুন। কিছুই না করে বিচার চলছে, সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখা হচ্ছে তেমন এক সময়ে জাস্টিস চাই জাস্টিস চাই বলে দাবি তোলার মধ্যে কোন বিবেচনা বোধ কাজ করছে? নাকি সবটাই এক শেখানো বুলি যা তাঁরা আউড়ে যাচ্ছেন। রোজ, প্রতিদিন প্রতিনিয়ত তাঁদের মধ্যের ব্যথা শূন্যতা আমরাও অনুভব করি, তাঁদের এই মন যে মানে না মানসিকতাটাও বোঝা যায় কিন্তু এই কিছুই হচ্ছে না, আমার মেয়ের খুনি আসলে ধরা পড়ছে না, তদন্ত ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, এই ধরনের বক্তব্য আসলে আসল দোষীর হাত শক্ত করবে। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এই যে এখনও আরজি কর নির্যাতিতার বিচার হচ্ছে না, তদন্ত ঠিক করে হচ্ছে না, আসল দোষীরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে, এই কথাগুলো বলা হচ্ছে, আপনারা সেই কথাগুলোতে কতটা গুরুত্ব দেন? আপনাদের কি মনে হয় যে সত্যি আরজি কর নির্যাতিতার বিচার হচ্ছে না? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।
এদিকে কুলতলিতে ধর্ষণ ও খুনের ৬০ দিনের মধ্যে দোষী সাব্যস্ত করা হল মূল অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে। ৫ অক্টোবর ওই মুস্তাকিনকে গ্রেফতার করা হয়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ তদন্ত প্রমাণ এনে হাজির করে এবং অপরাধীকে দোষী বলে ঘোষণা করলেন বারুইপুরের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। নিশ্চিত অ্যাপিল হবে, কিন্তু অভিযুক্ত জেলেই গেল এই অপরাধ থেকে সে বাঁচতে পারবে না আর সেই মেয়েটির অভিভাবকরা জানলেন যে, দেশের আইন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এমনটাই হতে পারত আরজি কর ঘটনার ক্ষেত্রেও, কিন্তু জলঘোলা করা হল, আর ঘোলা জলে অপরাধী কিছু অক্সিজেন পেল বইকি, যদিও এটাও নিশ্চিত যে সে ওই তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই আজ হোক কাল হোক সাজা পাবেই কিন্তু ইতিমধ্যে জাস্টিস জাস্টিস বলে চিৎকার করা মানুষজনদের বলব একটু ধৈর্য ধরুন, বিচার চলছে, সাইলেন্স, দ্য কোর্ট ইজ ইন সেশন।
The post Aajke | তিলোত্তমার বাবা-মাকে হয় ভুল বোঝানো হচ্ছে, না হলে তাঁরা ভুল বুঝছেন first appeared on KolkataTV.
The post Aajke | তিলোত্তমার বাবা-মাকে হয় ভুল বোঝানো হচ্ছে, না হলে তাঁরা ভুল বুঝছেন appeared first on KolkataTV.