নয়াদিল্লি: আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case In Supreme Court) দেশ জুড়ে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে মঙ্গলবার শুনানি শুরু হল এই মামলার। এই মামলার শুরুতেই বিচারপতি বলেন, এটা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনা নয়। দেশজুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজর দিতে হবে। চিকিৎসকরা নিরাপদে নিজেদের কর্মস্থলে যেতে পারেন সেদিকেও নজর দেওয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং হাসপাতলে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি একটি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে প্রথম শুনানি ছিল। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আরজি কর সংক্রান্ত মামলার লাইভ স্ট্রিমিং আরজিকরের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা দেখাচ্ছেন তাদের অবস্থান মঞ্চ থেকে। আরজি কর মামলার শুনানিতে উপস্থিত কপিল সিবল, অভিষেক মনু সিংভিরা। মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। তিনি জানতে চান যখন হাসপাতালে ভাঙচুর হচ্ছিল তখন পুলিশ কী করছিল। প্রথমে ঠিক ভাবে এফআইআর করা হয়নি। একটা হাসপাতালে সেখানে অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল সেখানে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। ষেখানে জুনিয়র চিকিৎসকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল সেখানে বহিরাগতরা কী ভাবে ঠুকল। প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। পুলিশ কি হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?
আরও পড়ুন: আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় সিট গঠন কলকাতা পুলিশ
বিচারপতি বলেন, মৃতার নাম ও ছবি ছড়িয়া পড়ার ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এই ঘটনার পর কেন দেরিতে এফআইআর করা হল তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল পুলিশ ও রাজ্যকে। কপিল সিবল জানালেন, নির্যাতিতার বাবার তরফে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ক’টার সময় দেহ হস্তান্তর করা হয়েছে? প্রশ্ন তোলে শীর্য আদালত। সিবলের জানান, রাত ৮:৩০ টায় দেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, দেহ হস্তান্তরে তিন ঘন্টা পর এফআইআর দায়ের করা হল কেন?
এদিন শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। সন্দীপ ঘোষ আরজি করের অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দেওয়ার পর এত তাড়াতাড়ি কী ভাবে আবার অন্য কোথাও যোগ দিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তা নিয়ে সিবিআইয়ের থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে স্ট্যাটাস রিপোর্ট তলব করেছে শীর্য আদালত। সন্দীপ ঘোষের অভিযোগ উঠেছে, তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। অধ্যক্ষ এটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। এমনকি পরিবারকে মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। যদিও রাজ্য দাবি করে এই অভিযোগ সঠিক নয় বলে। বিচারপতি বলেন, এটা স্পষ্ট যে মহিলা চিকিৎসকে যখন করা হয়েছে। কিন্তু প্রথমে তা উল্লেখ ছিল না। মহিলাদের কর্ম ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মহিলারা নিরাপদে কাজে যেতে না পারলে, সমাজে সবার অধিকার থাকবে কী ভাবে? প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, একটি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। ৭ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই টাস্ক ফোর্স চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি অনুসন্ধান করবে। ইতিমধ্যেই এদিনের মতো মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। মামবার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।
দেখুন ভিডিও