ঝাড়গ্রাম: গতকাল ঝাড়গ্রামে চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যুর খবর সামনে আসে। তারপর থেকেই শুরু হয় জল্পনা। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের ছাত্র দীপ্র ভট্টাচার্যের নিথর দেহ গতকাল উদ্ধার হয় তাঁর ফ্ল্যাট থেকেই। তড়িঘড়ি ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
মৃত চিকিৎসক দীপ্র ভট্টাচার্যের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বৃহস্পতিবার রাতেই সামনে আসে । আর যা ঘিরে দানা বাঁধছে রহস্য।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ওই চিকিৎসকের শরীরে কোনও কিছু একটা ইনজেক্ট করা হয়েছে, যার জেরে মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়ে মৃত্যু কোলে ঢলে পরেন দীপ্র। তবে এখনও ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সামনে আসেনি পুলিশের হাতে। পুলিশ সূত্রে দাবি, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সামনে আসলে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: ঝাড়গ্রামে ডাক্তারের রহস্যমৃত্যু! ভাইরাল মেসেজ ঘিরে শুরু তরজা
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের ছাত্র দীপ্র ভট্টাচার্যের নিথর দেহ উদ্ধার হয় তাঁর ফ্ল্যাট থেকেই। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, দীপ্রর নিথর দেহ উদ্ধারের আগে দীপ্রর ফোন থেকে একটি মেসেজ বিভিন্ন নম্বরে ফরওয়ার্ড হয়। সেই মেসেজে নিহত চিকিৎসক ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে আদৌ সেই মেসেজ দীপ্রর ফোন থেকেই ফরওয়ার্ড করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে গতকাল থেকেই পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ডিউটি সেরে সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ নিজের ঘরে পৌঁছন নিহত চিকিৎসক দীপ্র। তারপর থেকেই দীপ্রর স্ত্রী বারাবার ফোন করে দীপ্রকে না পেয়ে, অবশেষে বাদ্ধ হয়ে তিনি দীপ্রর সহকর্মীদের জানান দীপ্রর খোঁজ নিতে।
দীপ্রর সহকর্মীরাও তাঁকে বারবার ফোন করে, ফোনে না পেয়ে নিহত চিকিৎসকের ঘরের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন সহকর্মীরা।সাড়া না পেয়ে সহকর্মীরা ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন দীপ্রর নিথর দেহ পড়ে আছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন গ্রুপে পাঠানো শেষ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে দীপ্র লিখেছে, “বছর দেড়েক আগেও তিনি আরজি করে ছিলেন। অধ্যাপকরাও চাকরি বাঁচাতে দুর্নীতিতে মদত দেন।” তিনি আরও লেখেন, “যদি আন্দোলনরত ডাক্তারদের ফেল করিয়ে দেওয়া হয় বা কেউ থ্রেট দেয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে আমার আত্মা তাড়া করে বেড়াবে, ছিন্ন ভিন্ন করে দেব।”
তবে শুধুই যে মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচার নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে মেসেজ করেছিলেন দীপ্র তা কিন্তু নয়, নিজের স্ত্রীকেও একটি মেসেজ করেছিলেন ওই চিকিৎসক। তদন্তে পুলিশ জানায়, স্ত্রীকে করা মেসেজে ব্যক্তিগত, পেশাগত বিষয়ে নানা কথা বলেছেন ওই চিকিৎসক। সেই সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনা সম্পর্কে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, দীপ্র ভট্টাচার্য ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন, যার জন্য তিনি ওষুধও খেতেন। ঘটনায় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান মানসিক অবসাদেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই চিকিৎসক। তবে তাঁর শরীরে কী ইনজেক্ট করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা।
দেখুন অন্য খবর: