কলকাতা: ১৯৯৬ এর সোনালি শ্রীলঙ্কাকে মনে আছে? অর্জুন রণতুঙ্গা-জয়সূর্য-কালুভিথরনা-গুরুসিংহ-অরবিন্দ ডি সিলভা-মহানামা-মুরলিথরন- চামিন্ডা ভাসের মতো তারকা ক্রিকেটার খচিত লাইন আপ। বলা বাহুল্য, সেই লাইন আপের ধারে কাছেও বর্তমান শ্রীলঙ্কান দল নেই। শুক্রবার রাতের কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের দিকে সেই সোনালি দলের কেউ কেউ নিশ্চয়ই নজর রেখেছিলেন। উল্লেখ্য, সেই দলের অন্যতম তারকা জয়সূর্য অবশ্য বর্তমান শ্রীলঙ্কা দলের কোচ। আর এরকম রুদ্ধশ্বাস টাই দেখে নিশ্চয়ই আনন্দিত হয়েছেন। আর হবে নাই বা কেন? কারণ এই টাই- তো শ্রীলঙ্কার জয়েরই সমান।
প্রথমে ভারত-শ্রীলঙ্কা এই ওডিআই সিরিজকে কেউ তেমন গুরুত্বই দিতে চায়নি। ফলাফল সবারই প্রায় জানা ছিল। ক্লিন সুইপ করবে টিম ইন্ডিয়া। রোহিত-কোহলি বিশ্রামও নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গৌতম গম্ভীর কোচ হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলায়। দু’জনকে ওডিআই দলে নেওয়া হয়। শ্রেয়স আইয়ারকেও দলে প্রত্যাবর্তন করানো হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিত্রনাট্যে টুইস্ট! তারকা খচিত এই ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও অনভিজ্ঞ শ্রীলঙ্কান দলের বিরুদ্ধে জিততে ব্যর্থ রোহি-রাটরা। ২৩০ রান তাড়া করতে নেমে রুদ্ধশ্বাস টাইয়ে শেষ হয় ম্যাচের ফলাফল। এই ‘টাই’ কি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের নবজাগরণের আভাস? উত্তর অবশ্যই সময় দেবে।
গত এশিয়া কাপ ফাইনালে হারের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। চরিথ অসালঙ্কা-ওয়েল্লালাগে-হসারঙ্গার মধ্যে ৯৬ এর সোনালি অতীত ফেরানোর বীজ যে ইতিমধ্যেই জয়সূর্য বপন করে ফেলেছেন তা বলা বাহুল্য। ক্রাইসিস মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা বরাবরই ফিনিক্সের মতো ঘুরে দাঁড়ান। ১৯৯৬ সালে কলম্বো বম্বিং নাড়িয়ে দিয়েছিল সবাইকে। বিশ্বকাপের সময় অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে রাজি হয়নি শ্রীলঙ্কাতে। তা সত্ত্বেও ৯৬-এর গদ্দাফিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় রণতুঙ্গা এন্ড কোম্পানি।
এখনও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। একইসঙ্গে রয়েছে খাদ্য সংকটও। এরমধ্যে থেকেই তো জন্ম নেবেন ভবিষ্যতের জয়সূর্য-অরবিন্দ ডি সিলভারা! ২০২৭ – এ ৩১ বছর পর কি ১৯৯৬ এর ফ্ল্যাশব্যাক আবারও দেখা যাবে? আফ্রিকার দেশ কি মনে করাবে গদ্দাফির সেই রাতের কথা….