বাংলায় এখন তারস্বরে মান্না দের গান, সেই বসন্ত বিলাপ ছবির গান বাজছে, লেগেছে লেগেছে লেগেছে আগুন….তুম তানা নানা নানা/ আয় তোরা দেখে যা না জ্বলছে জ্বলছে দ্যাখ সব পরীদের ডানা/ প্রচন্ড তাপ কী কাণ্ড বাপ কী কাণ্ড বাপ
ক’দিন আগেই গলায় গলায় সম্পর্কের কাঁথাতে আগুন ধরিয়ে সিপিএম কংগ্রেস এ রাজ্যে কেবল মুখোমুখি নয়, একে অন্যকে বিজেপি নয়, আরএসএস বলছে। অবশ্য এটা হওয়ার ছিল, মেলালেই মিলে যাবে এমনটা খুব সোজা নয়, কিছু ক্ষেত্রে তো তা অসম্ভব। তেল আর জল সমান পরিমাণ নিয়ে মিক্সিতে ব্লেন্ড করে আধঘন্টা রাখুন, দেখবেন আবার যেই কে সেই। তেল না হয়ে নুন বা চিনি হলে কিন্তু মিলে যেত। খুব নিরামিষ গলাতেই আপাতত এই বাংলাতে বামেদের সবেধন নীলমণি সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, কংগ্রেসের জরুরি অবস্থার কথা তো ভোলা যাবে না, কংগ্রেসের সাঁইবাড়ি ভোলা যাবে নার জবাবে তিনি জানিয়ে দিলেন জরুরি অবস্থার কথা মনে আছে, আর তারপরে সেই বোমা, কংগ্রেসের মধ্যে আরএসএস-এর লোকজন আছেন, কংগ্রেসের কিছু নেতা আরএসএস-এর এজেন্ডা নিয়েই চলেন। হ্যাঁ, এই কথা বলেই দিলেন যদিও বললেন না যে কংগ্রেসের কোন নেতারা তাঁর টার্গেট। ব্যস, ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। হাজির জবাব, রাজ্য সভাপতি শুভঙ্কর সরকার ছেড়ে কথা বলবেন কেন? তিনিও মনে করিয়ে দিলেন ওই বিকাশবাবুকে যে আপনার দিল্লির লাড্ডুটা কিন্তু কংগ্রেসের সমর্থনেই পাওয়া, রাজ্যসভার আসনে কংগ্রেসের সমর্থন না থাকলে জিতে দিল্লি যেতে পারতেন না এবং এটুকু বলেই কি ক্ষান্ত দিলেন? তিনিও ঐ আরএসএস বোমাটা ছাড়লেন। বললেন যদি বলি আপনাদের দলেও আরএসএস আছে কেমন লাগবে? এই হালকা শীতে এই উত্তেজনার আঁচ পোয়ানো বেশ মজাদার কাজেই এটাই আমাদের বিষয় আজকে, কংগ্রেস-সিপিএম কাজিয়ার সূত্রপাত হয়ে গেল এই বাংলায়।
বাংলাতে নতুন হলেও এই কাজিয়া কিন্তু কেরালাতে বেশ পুরনো ব্যাপার। গত দশ বছর ধরেই লাগাতার সিপিএম কংগ্রেসকে, কংগ্রেস সিপিএমকে কেরালাতে রীতিমতো ফলাও করে জনসভায়, সাংবাদিক সম্মেলনেকে অন্যকে আরএসএস, আরএসএস-এর এজেন্ট বলেন। অথচ সেই দলের নেতা জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের হাত ধরে চলেন, রাহুল সীতারামে কেমিস্ট্রি তো সবার জানা।
আরও পড়ুন: Aajke | কার্তিক ঠাকুর, শুভেন্দু অধিকারী এবং বিকাশ ভট্টাচার্য
আবার এই বাংলাতে এতদিন এই আরএসএস বলে দাগিয়ে দেওয়ার রাজনীতিটা কিন্তু বরাদ্দ ছিল মমতার জন্য, তৃণমূলের জন্য। তৃণমূল নেত্রীকে তো আরএসএস পছন্দ করে, তাদের পত্রিকাতে মমতাকে দেবী দুর্গা বলা হয়েছে, ভুলেই গেছেন ইন্দিরা গান্ধীকে দেবী দুর্গা বলেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী, ৭১-এ ভারত-পাক যুদ্ধের সময়ে। সে থাক, প্রশ্ন হল কেন একে অন্যকে আরএসএস বলে গোলা দাগাদাগি চলে? ওদিকে দিল্লিতে আপ নেতা কেজরিওয়াল বলেছেন কংগ্রেস নেতারা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে হারানোর চেষ্টা করছেন। এই বাংলাতে মমতা বারবার বলেছেন রাম-বাম তত্ত্বের কথা, বলেছেন কংগ্রেস বাম বিজেপি মিলে আমাকে হারানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কেরালা বা জাতীয় রাজনীতিতে যাই হোক না কেন এই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেস বাম কাছাকাছি হয়েছিল, অধীর চৌধুরিকে তো শুনেছি কেউ কেউ বলতে শুনেছেন লাল সেলাম কমরেড। তো সেই ঘনিষ্ঠতা ঘুচেছে বেশ কিছুদিন আগেই, নতুন অঙ্ক তৈরি হচ্ছে, নতুন সমীকরণের আগে তো একটা ভূমিকা থাকবে, আমার মনে হয় সেই ভূমিকা নেওয়া শুরু হয়ে গেল। মানে হঠাৎ করে তো সমীকরণ বদলানো যায় না, প্রদীপ ভট্টাচার্য গানের মুখড়াটা ধরে দিয়েছেন, এবার খোল কর্তাল নিয়ে শুভঙ্কর সরকার, হোক হোক, আমরা পাবলিক রঙ্গ তামাশা দেখার জন্যও বসে আছি। আমরা আমাদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, এই ক’দিন আগে একে অন্যের হাত ধরে চলা বঙ্গ সিপিএম আর কংগ্রেস এখন একে অন্যকে আরএসএস বলছে, একে অন্যকে বিজেপির এজেন্ট বলছে, ব্যাপারটা কী? দোস্তি কি শেষ হল? এবার কি নতুন সমীকরণ? শুনুন মানুষজন কী জবাব দিয়েছেন।
এমনিতে রাজনীতি মানেই একঘর রগড়, কে যে কখন কার হাত ধরবে, কে যে কার ঘরে গিয়ে উঠবে তা কারও জানা নেই, রাজনীতি নাকি অসম্ভবকে সম্ভব করার খেলা। কিন্তু জানতে মন চায় সিপিএমে কারা কারা আরএসএস-এর ধামাধারী? আর কংগ্রেসেরই বা কারা কারা আরএসএস-এর এজেন্ট। উত্তর তো আমাদের কাছে নেই, আছে তো বিকাশদা আর শুভঙ্করের কাছে, তাই বলছিলাম ওনারা যদি একটু খোলসা করে নামগুলো জানিয়ে দিতেন তাহলে মানুষের বড্ড উপকার হত।
The post Aajke | কংগ্রেস-সিপিএম কাজিয়ার সূত্রপাত হয়ে গেল এই বাংলায় first appeared on KolkataTV.
The post Aajke | কংগ্রেস-সিপিএম কাজিয়ার সূত্রপাত হয়ে গেল এই বাংলায় appeared first on KolkataTV.