পশ্চিম মেদিনীপুর: আলোর উৎসব দীপাবলি। এদিন গ্রামবাংলায় চিরাচরিত প্রথা মেনে ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে চীনা আলোরে আলোর কোপে বিলুপ্তির পথে মাটির প্রদীপ। ফলে রোজগারের পথ বন্ধের মুখে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা ২ নম্বর ব্লকের বাচকা কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীদের। বাজারে আগের মতো চাহিদা নেই মাটির প্রদীপের । এত পরিশ্রম করেও কাঁচামালের খরচটুকুও ওঠে না। মাটির আকাল চরমে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে জীবিকা ছাড়ছেন।
একসময়ে পশ্চিমে মেদিনীপুরের এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের জীবিকা ছিল মাটির প্রদীপ ও একাধিক মাটির জিনিস তৈরি করা। মাটির জিনিস বানিয়েি সংসার চলত তাদের। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যাটা হাতে গোনা। আগে এক একটি মাটির প্রদীপের দাম ছিল তিন থেকে চার টাকা। বর্তমানে মাত্র এক টাকা দরেই মাটির প্রদীপ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: রেশনের মালে কারচুপি, ডিলারকে ঘিরে বিক্ষোভ গ্রাহকদের
কালীপুজোর মরসুমে বাজার ছেয়েছে চীনা আলো ও বাহারী মোমবাতিতে। বাজারে কোণঠাসা মাটির প্রদীপ। চরম সংকটে চন্দ্রকোণার মৃৎশিল্পীরা। সরকারি সাহায্য বা বংশপরম্পরায় চলে আসা কুমোরপাড়ার শিল্পীদের মেলেনি স্বীকৃতি। স্পষ্ট আক্ষেপ তাদের চোখে মুখে।সরকারি স্বীকৃতি মিললে বা শিল্পীদের ভাতার ব্যবস্থা হলে কাজ বাঁচিয়ে রাখার তাগিদা বাড়ত বোলে দাবি মৃৎশিল্পীদের।
বছর কয়েক আগেও কালীপুজোর আগে নাওয়া-খাওয়া ভুলে মাটির প্রদীপ তৈরিতে চরম ব্যস্ত ছিল কুমোরপাড়ার কারিগরদের। পুরুষদের পাশাপাশি একাজে হাত লাগাত পরিবারের মহিলারাও। সামনেই কালীপূজা। আগের মতো ব্যস্ততার ছবি উধাও কুমোরপাড়ায়।বংশপরম্পরায় চলে আসা মাটির প্রদীপ তৈরি কাজ ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। গ্রামের বয়স্করা আজ তা টিকিয়ে রাখলেও, নতুন প্রজন্মের কাছে মোমবাতি ও চীনা আলোর দাপটে এক প্রকার বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের মাটির প্রদীপ। মুখভার কারিগরদের।