আরামবাগ: তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে জোর করে বর্গাজমি দখলের অভিযোগ। বর্তমান প্রধান জমি ফেরতের আস্বাস দিলেও কাটমানি চাইছেন পঞ্চায়েত সদস্য বলে অভিযোগ। জমি বিতর্ক নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত আরামবাগের আরাণ্ডী ১ অঞ্চল তৃণমুল। তৃনমুলের দলাদলির গেরোয় পড়ে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছেন বৃদ্ধ কৃষক।
জানা গিয়েছে,আরামবাগের আরান্ডী ১ পঞ্চায়েত এলাকার সাতমাসা গ্রামে প্রায় তিন বিঘা জমি পৈতৃকসূত্রে বর্গাদার হিসেবে চাষ করতেন স্থানীয় কৃষক হারু মালিক। রাজ্যে তৃণমুল ক্ষমতায় আসার পর এই এলাকায় পঞ্চায়েত প্রধান হন এলাকার দাপুটে তৃনমুল নেতা সোহরাব হোসেন। প্রধান হওয়ার পরই এলাকায় একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এই সময়েই সাতমাসায় হারুর বর্গাপ্রাপ্ত জমির মালিকানা কেনেন তিনি। বর্গা আইন অনুযায়ী, মালিকানা পরিবর্তন হলেও বর্গাদার উচ্ছেদ না করতে পেরে নিজের প্রভাব খাটিয়ে কার্যত ভয় দেখিয়ে হারুকে উচ্ছেদ করে দেন বলে অভিযোগ। হারু মালিকের দাবি, তারপর থেকেই তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিতে বঙ্গ জুড়ে দুর্যোগ, বিপর্যয়ের মুখে সুন্দরবন!
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আরান্ডী ১ পঞ্চায়েতের প্রধান পদ হারান সোহরাব। নতুন প্রধান হন তৃণমূলের তেকদিরা খাতুন। এদিকে দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েন একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী সোহরাব হোসেন। পরিস্থিতি বিচার করে নিজের বর্গাজমি জমি ফেরত পেতে পঞ্চায়েত সদস্যের দ্বারস্থ হন হারু। তাঁর অভিযোগ, তৃণমুল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাটমানি দাবি করেন। ফলে বাধ্য হয়ে বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত প্রধানও জমি ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন।
যদিও কাটমানি চাওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। পাল্টা এই ঘটনায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের একাংশকেই কাটগড়ায় তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে জমি দখলের অভিযোগ সম্পুর্ন অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সোহরাব। তাঁর দাবি, নিয়মমতোই জমির মালিকের কাছ থেকে জমি কিনেছেন তিনি। এমনকী অভিযোগকারী হারুকে চেনেনই না বলে দাবি করেন সোহরাব।
এদিকে সোহরাব জমানায় তৃণমূলের অত্যাচারের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন আরান্ডী ১ অঞ্চল সভাপতি মুন্সী ইকবাল হোসেন। জমি বিতর্ক নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিও। সবমিলিয়ে সাতমাসার বর্গাজমি নিয়ে রাজনৈতিক দলাদলির জেরে কতদিনে নিজের বর্গাজমি ফেরত পান ওই অসহায় কৃষক তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।