কলকাতা: বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিয়ে নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। সাগরের বুকে শক্তি বাড়িয়ে স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে এই সুপার সাইক্লোন। আর তা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। বাংলা ও ওড়িশার বুকে গত কয়েক দশকে হানা দিয়েছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়। বিধ্বংসী ঝড়ের দাপটে বাংলা ও ওড়িশা দুই রাজ্যই একাধিক বার লণ্ডভণ্ড হয়েছে। ১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোনের পর থেকে ওড়িশা এ পর্যন্ত ১২টি ঘূর্ণিঝড় দেখেছে। হুদহুদ, আয়লা, ফণী, বুলবুল,আমপান, রেমাল আছড়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়েছে ওড়িশার গ্রাম। প্রাণ হারিয়েছিল বহু মানুষ। হাওয়ার দাপটেই ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছিল।
১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোন ওড়িশার ওড়িশার জগৎসিংহপুর জেলার পারাদ্বীপে আছড়ে পড়ে ছিল।২৬৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে সেই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডবলিলা চালিয়েছিল। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় ‘ফাইলিন’ আঘাত হানে ওড়িশায়। গঞ্জাম, পুরী এবং খুর্দা জেলায় ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল ‘ফাইলিন’। ঝড়ে ঘরবাড়ি, চাষবাস, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। ২০১৪ সালে ওড়িশায় যে ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালিয়েছিল তার নাম ছিল ‘হুদহুদ’। ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার ছিল ঝড়ের গতিবেগ। ওড়িশার গজপতি, কোরাপুট, নবরংপুর এবং মালকানগিরিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০১৯ সালের ওড়িশার পুরীর কাছে আছড়ে পড়ে ‘ফণী’। ২০৫ কিমি বেগে আছড়ে পড়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: কলকাতায় দানা’র প্রভাব কতটা, কী জানাল আলিপুর
২০১৯ সালের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপে আছড়়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। এর প্রভাবে ওড়িশার বালেশ্বর জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া এবং ভদ্রকের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ২০২০ সালের পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং হাতিয়ার মধ্যে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’। এর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক, জগৎসিংহপুর এবং কেন্দ্রাপাড়া উপকূলীয় জেলাগুলিতে পড়েছিল। ২০২৩ অক্টোবরে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার কাছাকাছি জায়গায় আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। ওড়িশার উপকূলবর্তী বাসিন্দাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, কোথায় এবং কত বেগে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’?
আবহাওয়া দফতর জানাল, ‘আমফান’ অনেক শক্তিশালী ছিল। বাতাসের গতিবেগ থেকে একে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ অনুসারে আমফানের গতিবেগ অনেক বেশি ছিল। যেটা ছিল- অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়। সমুদ্রেও সুপার সাইক্লোন ছিল। সেই তুলনায় কম শক্তিশালি ছিল। ‘রেমাল’ সিভিয়র সাইক্লোন ছিল। অতি তীব্র পর্যন্তও গিয়েছিল। রেমালের থেকে খুব একটা পার্থক্য এর নেই। রেমাল আর ‘দানা’ খুব একটা পার্থক্য নেই। ওড়িশার পাশাপাশি, বাংলাতেও ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা।
অন্য খবর দেখুন
The post কতটা শক্তিশালি ‘দানা’? প্রশ্ন বাংলা-ওড়িশার উপকূলবর্তী বাসিন্দাদের first appeared on KolkataTV.
The post কতটা শক্তিশালি ‘দানা’? প্রশ্ন বাংলা-ওড়িশার উপকূলবর্তী বাসিন্দাদের appeared first on KolkataTV.