জম্মু: ‘জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার নানানভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার নামিয়ে আনছে। জেলে বন্দি করা হচ্ছে। অভিযোগ সিপিআইএমের। যার বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিল সিপিআইএম। বুধবার সিপিআইএম কুলগাম জেলা কমিটির পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলনে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব পাস করা হয়েছে।
কুলগাম জেলা সিপিএমের অভিযোগ, ধারা ৩৭০ বাতিলের পর থেকেই নানান ভাবে জম্মু-কাশ্মীর মানুষের উপর অন্যায়-অত্যাচার নামিয়ে আনা হচ্ছে। নিরীহ মানুষদের গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। UAPA(Unlawful Activities Prevention Act), PSA (Public Safety Act)- অপব্যবহার হচ্ছে। আইনকে সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। এ করণে জম্মু-কাশ্মীরের সমস্ত ধর্ম, বর্ণের মানুষকে টার্গেট করা হচ্ছে। যুব সমাজকে অন্যায় ভাবে জেলে ভরা হচ্ছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইউসুফ তারিগামি বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের সমস্ত জেলখানা যুব সমাজে ভর্তি হয়ে গেছে। জম্মু-কাশ্মীর বাইরের জেলেও ভূ-স্বর্গের ছেলেরা বন্দি রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্যায় ভাবে সরকার তাদের বন্দি করে রেখেছে। কার্যত ভূস্বর্গে সরকার অন্ধকার নামিয়ে এনেছে। যার বিরুদ্ধে সিপিএম আগেও লড়াই করেছে, আগামীতেও করবে। কোনভাবেই প্রশাসন ও সরকার কর্তৃক নিরীহ নারীদের উপর অন্যায় অত্যাচার মেনে নেওয়া হবে না।”
While seconding the resolution adopted in CPIM district conference Kulgam on human rights violation in J&K.
We will continue to fight in these dark times against every injustice inflicted upon innocent civilians by administration and Govt. pic.twitter.com/MkPnEwVBI5
— M Y Tarigami (@tarigami) November 25, 2021
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে শ্রীনগরে একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের ভেতর জঙ্গি নিধন অভিযান চলার সময় সিমেন্ট ব্যবসায়ী আলতাফ ভাট এবং ডেন্টাল সার্জেন মুদাসির গুলের মৃত্যু হয়৷ এছাড়া দুই জঙ্গি পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়৷ পুলিশ জানায়, ওই দু’জনের একজন পাকিস্তানি এবং আরেকজন স্থানীয় জঙ্গি৷ বাকি দু’জন আলতাফ এবং মুদাসির জঙ্গিদের মদতদাতা৷ এরা জঙ্গিদের নানা ভাবে সাহায্য করত৷ তবে আলতাফ এবং মুদাসিরের মৃত্যু নিয়ে বারবার অবস্থান বদলায় কাশ্মীর পুলিশ৷ প্রথমে জানায়, জঙ্গিদের গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে৷ পরে জানায়, ক্রশ ফায়ারিংয়ের সময় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে৷ শেষে কাশ্মীর পুলিশের আইজি বলতে বাধ্য হন, ময়নাতদন্তে যদি একে রাইফেলের গুলি মুদাসির এবং আলতাফের শরীরে মেলে তাহলে পুলিশে গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বুঝতে হবে৷
মুদাসির এবং আলতাফের পরিবারের দাবি, পুলিশের গুলিতেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে৷ মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের পর পুলিশ তাদের খতম করে৷ আলতাফের ১৩ বছরের মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, পুলিশ আঙ্কেলকে সে জিজ্ঞাসা করেছিল কেন তার বাবাকে মারা হল? প্রশ্ন শুনে নির্লজ্জের মত হেসেছিল পুলিশ৷ খুনের পর দেহ পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি৷ পুলিশ জঙ্গিদের সঙ্গে আলতাফ এবং মুদাসিরের দেহ করব দেয়৷ অপরদিকে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু ‘জঙ্গি’ আমিরের পরিবারও প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ নিহতের বাবা আব্দুল লাতিফ জঙ্গিকে পাথর মেরে ২০০৫ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে পুরস্কৃত হয়েছিলেন৷ তাঁর ছেলে জঙ্গি হতে পারেন না বলে জোর গলায় দাবি করেন আব্দুল লাতিফ৷