লখনউ: সময় এগোচ্ছে। দূরত্ব ততই বাড়ছে। দিল্লিতে গিয়ে দেখা না করা, ইউপিএ নিয়ে প্রশ্ন তোলা, দলীয় মুখপত্রে ধারাবাহিক আক্রমণ, সর্বভারতীয় সহ সভাপতির লাগাতার কটাক্ষ, সুপ্রিমোর মুখখোলা- এসব তো ছিলই। সেই কংগ্রেস বিরোধিতা এবার সপ্তমে নিয়ে গেলেন মমতা। লখনউ থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি মানুষের আবেদন জানালেন, এমন কোনও শক্তিকে তারা যেন ভোট না দেয়, যা নষ্টের সামিল। মমতার কথায়, ভোটের আগে ‘কোয়েল-দোয়েল’দের দেখা যায়। ভোট চলে গেলে তারাও চলে যায়।
বুঝতে অসুবিধা হয়নি কোয়েল-দোয়েল বলতে মমতা কাকে বোঝাতে চেয়েছেন। নিঃসন্দেহে মমতার আক্রমণের নিশানায় রাহুল গান্ধী-প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। শুধু কংগ্রেস নয়, হায়দরাবাদ ভিত্তিক আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মিমকেও আজ নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, কিছু মানুষ দিল্লি-হায়দরাবাদে বসে রাজনীতি করে চলেছেন। যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনও যোগ নেই। এই সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মমতা।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ভোট এলেই কিছু মানুষেরা আগমন ঘটে। এরা যেন বসন্তের কোয়েল। ভোট চলে গেলে এরা হারিয়ে যায়। তাঁদের সঙ্গে মানুষের কোনও যোগ নেই। তারা প্রতিবাদ করতে জানে না। এদের ভোট দিয়ে তা নষ্ট করবেন না। সবাই একজোট হয়ে অখিলেশের হাত শক্ত করুন। উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারানোর অর্থ সারা দেশে বিজেপির পরাজয়।
আরও পড়ুন: UP Elections 2022: এবার বারাণসী থেকে মোদি বিরোধী সুর সপ্তমে তুলতে চলেছেন মমতা
বাংলায় বিধানসভা ভোটের পর থেকেই কংগ্রেস-তৃণমূলের ব্যবধান চওড়া হয়েছে। সময় যত এগিয়েছে, তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ততই সুর চড়িয়েছেন। মমতা প্রশ্ন তুলেছেন ইউপিএর অবস্থান নিয়েও। চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন। গোয়ায় জোট না হওয়ার জন্য সরাসরি কংগ্রেস তথা চিদাম্বরমকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল। সংসদেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছে তারা। কংগ্রেসকে দূরে সরিয়ে বিজেপি বিরোধী মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা নিজেই।
মমতার হাত ধরে তৃণমূল বাংলার ছাড়িয়ে ত্রিপুরা, গোয়া, মণিপুর, হরিয়ানায় সংগঠন গড়ে তুলেছে তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন মানেই ধরে নেওয়া হয় তা লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল। এবার সেই সেমিফাইনালের মঞ্চ থেকে ফাইনাল লড়াইয়ের আগে কংগ্রেস বিরোধী অবস্থানই বজায় রাখলেন মমতা।