‘বাংলা ভাগের চক্রান্ত বরদাস্ত করা হবে না। দরকারে রক্ত দিয়ে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।’ সাংবাদিক সম্মেলনে এই ভাষাতেই কড়া হুশিয়ারি দিলেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা কোচবিহার পুরসভার পুর প্রশাসক উদয়ন গুহ।
আরও পড়ুন: রবিবার রাজ্যে ভারী বর্ষণ
শনিবার কোচবিহার শহরের গোলবাগান এলাকায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংবাদিক সম্মেলনে দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র শিবপদ পাল, প্রাক্তন বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান সহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃত্ব।
উদয়ন গুহ বলেন, ‘বিজেপি বিধানসভা ভোটে হার মেনে নিতে পারেনি। তাই উস্কানিমূলক কাজ করছে। বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছে। বিজেপি দাবি করছে, উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গঠনের পর থেকে উত্তরবঙ্গের সর্বত্র উন্নয়ন হয়েছে। কলেজ, রাস্তাঘাট, পর্যটন, ব্রিজ সবকিছুই হয়েছে। তাঁর হুশিয়ারি, এর পরেও যদি কেউ বাংলা ভাগের চক্রান্ত করে তাহলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনে নামব।’
আরও পড়ুন: বঙ্গে সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই পেট্রোল, মুখে কুলুপ মোদি-শাহ’র
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাহুল কুমার রায় বলেন, ‘গত কয়েকবছরে উত্তরবঙ্গে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত রাজ্য করার যে প্রস্তাব বিজেপি সাংসদ জন বারলা নিয়ে এসেছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। ফের উত্তরবঙ্গ অশান্ত হলে তার দায় বিজেপিকেই নিতে হবে। জন বারলার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক বিজেপি।’
পৃথক রাজ্যের ইস্যুতে শনিবার আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই উত্তরবঙ্গ রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা দরকার। করোনা সংকট কাটলেই এই দাবি নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব। তাঁর দাবি, ‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত টাকা পাঠালেও উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশি রোহিঙ্গারা ভোটার, র্যাশন কার্ড পেলেও বঞ্চিত উত্তরবঙ্গের অনেক ভূমিপুত্র।’
আরও পড়ুন: ৮১ দিন পর দৈনিক আক্রান্ত ৬০ হাজারের নীচে
বারলা এই বক্তব্যকে অবশ্য সমর্থন করেনি রাজ্য বিজেপি। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এটা দলের বক্তব্য নয়। বাংলা ভাগ চায় না রাজ্য বিজেপি। বিজেপি চায় রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক। সাংসদ–বিধায়কদের সম্মান করা হচ্ছে না। সেই কারণেই এই ধরনের মন্তব্য সামনে আসছে। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও বারলার বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
পৃথক রাজ্যের ইস্যুতে পালটা সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও। রাজ্যর পরিবহনমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিম৷ বিজেপি সাংসদকে পাল্টা কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘ইংরেজরা একসময় বাংলা ভাগের চক্রান্ত করেছিল, ফের নতুন করে সেই চক্রান্ত হচ্ছে৷ বাংলার মানুষ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে৷ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গকে কখনওই আলাদাভাবে দেখা হয় না৷ উত্তরবঙ্গ ভাগের পরিকল্পনা নিয়ে যদি কোনও আশান্তি সৃষ্টি হয় তবে সেই দায় নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে৷’