আগরতলা: ত্রিপুরা পুরভোটে (Tripura Election) সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেছেন, ‘ত্রিপুরা পুরভোটে (Tripura Civic poll) কোনও হিংসাই হয়নি। কেউ মাইক বাজিয়েছেন। সেটাকে সন্ত্রাস বলে চালানো হচ্ছে। ফেক ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে তৃণমূল।’ দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষের ত্রিপুরার নির্বাচন সম্পর্কে কোনও ধারনাই নেই। ওরা ফেক ভিডিয়ো ছড়ায় বলে ভাবছে তৃণমূলও ফেক ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে। সকালে ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর ভোট দিতে গিয়ে একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও তাঁর ছেলেকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পান্না দেবকে নিগ্রহ করা হয়েছে। ১০ জন প্রার্থী ভোট দিতে পারেনি। তাঁদের ভোট লুট হয়েছে। সকাল থেকে অবাধ ছাপ্পা, রিগিং, বুথ দখল, সন্ত্রাস হয়েছে। আমাদের ফেক ভিডিয়ো ছাড়তে হবে না। সমস্ত টিভি চ্যানেল দেখিয়েছে। আমরা সংবাদমাধ্যম থেকে ভিডিও নিয়েছি।’
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা টিভি ডিজিটালকে বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে, ভোটার ভোট দেবেন বলে ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। একজন হার্মাদ তাঁর ভোট দিয়ে দিচ্ছে। বহিরাগত গুন্ডাদের নিয়ে এসেছে বিজেপি। অনেক এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। বিজেপির মন্ত্রীকে ঘিরে রেখে ভোট না দিতে পারার জন্য বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সত্তরোর্ধ মহিলা ও তাঁর স্বামীকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। সন্ত্রাস এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে শাসকদল বিজেপির বিধায়ক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। দিলীপবাবুরা চোখে ঠুলি পড়ে বসে আছেন।’
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় পুরভোটে সন্ত্রাস হয়নি! দাবি দিলীপের
শুক্রবার সকালে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘পশ্চিমবাংলায় কোনও ভোট শান্তিতে হয় না। আর হবেও না। এটাই এখন পলিটিক্যাল কালচার হয়ে গিয়েছে। এরপর ত্রিপুরা নিয়ে যারা এত হা-হুতাশ করছে, তারা কি ভুলে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে এখানে ডজন ডজন লোক মারা যান। ওখানে কী হয়েছে? কারও মুখে একটু চোট লেগেছে, কোথাও পড়ে গিয়েছে। কী হয়েছে সেটা কেউ জানে না। এতদিন সন্ত্রাস বলে যা চালাত, কোথাও সন্ত্রাস নেই। আপনারা গিয়ে খেলা হবে বলেছেন, আপনাদের কেউ বলেছে খেলা হবে। আপনারা মাইক বাজাচ্ছেন, সেখানে কেউ মাইক বাজিয়েছে। এটাকে সন্ত্রাস বলছেন কেন?’
পুরভোটের শুরু হতেই ত্রিপুরাজুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয় বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এজেন্টদের মারধর, ভোটারদের ভয় দেখানো থেকে শুরু করে বুথের বাইরে বিজেপির অবৈধ জমায়েত, কোনও কিছুই বাদ যায়নি। দিনভর হিংসা, হামলা, ভোটে বাধা নানান অভিযোগ ওঠে৷ বহু জায়গায় তৃণমূল প্রার্থীকে বুথে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ সাধারণ মানুষকে ‘ভোট হয়ে গেছে, বাড়ি যান’ বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ত্রিপুরার বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, পুলিস-প্রশাসনকে সব জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ বহু জায়গায় প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে৷
আরও পড়ুন: Tripura Civic Polls: ত্রিপুরায় পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে যাবে তৃণমূল