সুনীল মণ্ডল ফের তৃণমূলে ফিরছেন, এই জল্পনা তৈরি হতেই শাসক শিবিরে জোরালো হচ্ছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের লাগানো ফ্লেক্সেও সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সুনীল মণ্ডল সহ বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতাদের বিরোধিতা করার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে রাবণের তুলনা করা হয়েছে। এই ফ্লেক্সে ছয়লাপ জামালপুর বিধানসভার শুড়েকালনা এলাকা। ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: জেলাপরিষদের বিজেপির ৪ সদস্য তৃণমূলে
এই বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ পাল জানিয়েছেন, তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে জিতে সুনীল মণ্ডল সাংসদ হয়েছিলেন। অথচ বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য বিজেপি নেতাদের নির্দেশ মেনে তৃণমূলের বিরোধিতা শুরু করেন। বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো সহ অনেককে আক্রমণ করতে থাকেন।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ কমলেও ঢিলেমি নয়, মুখ্যসচিবদের চিঠি কেন্দ্রের
তাঁর অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের আগে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন সুনীলবাবু। কিন্তু ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর এখন তাঁর ভোলবদল হয়েছে। তৃণমূলে ফেরার রাস্তা পাকা করতেই সুনীলবাবু সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। এতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। দলের কর্মীরা কেউ চান না সুনীল মণ্ডল ফের তৃণমূলে ফিরে আসুক।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব ফের আন্তেনিও গুতেরেসই
সেই দাবির বিষয়টি তুলে ধরতেই সুনীল মণ্ডলের রাজনৈতিক স্বরূপ তুলে ধরে এমন ফ্লেক্স তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় লাগিয়েছেন বলে দাবি করেন প্রদীপবাবু। যদিও এই বিষয়ে সুনীল মণ্ডলকে ফোন করা হলে তিনি ফোন না ধরায় কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। জামালপুর বিধানসভায় বিজেপির আহ্বায়ক জিতেন ডকাল জানান, সুনীল মণ্ডল হলেন নীতি আদর্শহীন ক্ষমতার মধু খাওয়া রাজনীতিক। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসছে, এমন হাওয়া উঠতেই তিনি বিধানসভা ভোটের আগে ‘ক্ষমতার মধু’ ভক্ষণের বাসনা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভাঙন অব্যাহত, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ৪০টি পরিবার
তাঁর বক্তব্য, বিজেপি জিততে না পারায় সুনীলবাবু এখন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফের ভিড়ে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। রাজ্যে এইরকম অনেক সুনীল মণ্ডল রয়েছেন। যাদের নিয়ে এখন রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা চলছে। জিতেনবাবু জানান, সুনীল মণ্ডলের মতো নেতা বিজেপিতে থাকুক তা তিনিও চান না।
আরও পড়ুন: দলের রং ভুলে রক্তের রঙে মেলবন্ধন
শুধু ফ্লেক্স নয়, রাস্তায় নেমেও সুনীলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। দিনকয়েক আগে জামালপুরের আবুঝহাটি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জবা কিস্কু ও উপপ্রধান সমর পালের উপস্থিতিতে ফ্লেক্স হাতে বিক্ষোভ দেখান কর্মী সমর্থকরা। ফ্লেক্সে লেখা ছিল, দলের দুঃসময়ে দলত্যাগী, দলের সুসময়ে প্রত্যাবর্তনে ইচ্ছুক সুনীল মণ্ডলকে দলে মানছি না, মানব না।