কলকাতা: তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সোমবার প্রথমবার দিল্লি পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল তিনটের ফ্লাইটে কলকাতা থেকে পাঁচটা নাগাদ দিল্লি পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় দু’বছর পর রাজধানীতে পা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী। প্রায় এক সপ্তাহের সফর তাঁর। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক রয়েছে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধির সঙ্গেও দেখা করতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুন- ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে জট কাটল না হাইকোর্টে
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জিএসটি খাতে রাজ্যের পাওনা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা হতে পারে৷ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আচারণ নিয়েও অভিযাগ জানাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পুলিশকে দেওয়া-সহ এক্তিয়ারে বাইরের গিয়ে কাজ করা নিয়েও কথা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ শুধু কি তাই?
আরও পড়ুন- লাগাতার বিক্ষোভে অচলাবস্থা সংসদে, বিরোধীরাই ভরসা কেন্দ্রের
পেগাসাস ইস্যু, কৃষি আইন বাতিলের মতো ইস্যু নিয়ে মোদি সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি সামনের সারি থেকে লড়াইয়ের পরিকল্পনা তৃণমূলের। তাই, তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বিজেপি বিরোধী দলগুলির নেতাদের বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠকেই ২০২৪-র সলতে পাকানোর কাজ শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, একুশের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে গো-হারা হারানোর পর জাতীয় রাজনীতিতে মমতার গুরুত্ব বেড়েছে। একুশের শহিদ দিবসে ভার্চুয়াল বার্তাতেই সর্বভারতীয় স্তরেই লড়াই জোরদার করার কথা বলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বলেছিলেন, “আমি দিল্লি যাচ্ছি। আমি পাওয়ারজি ও চিদম্বরমজিকে অনুরোধ করব সেই সময় একটা বৈঠকের আয়োজন করতে, যাতে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পারি।”
আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে ভূমিধসে মৃত বেড়ে ১৬৪, নিখোঁজ শতাধিক
কংগ্রেস, এসপি, এনসিপি, ডিএমকে-সহ বিজেপি বিরোধী দল মোদি বিরোধিতায় তৃণমূল সুপ্রিমোকে পাশে চাইছে। রাজ্যের বামেরাও জাতীয় স্তরে তৃণমূলের পাশে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে৷ বুধবারের বৈঠকে তৃণমূলের তরফে বামেদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ যদিও সেই বৈঠকে বামেদের কেউ থাকবেন কি না তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি৷
আরও পড়ুন- হিংসার প্রতিবাদে হেলমেট পরে বিধানসভায় বিধায়করা
পেগাসাসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে রবিবার কংগ্রেসের তরফে টুইট করা করা হয়েছে। সেই টুইট রিটুইট করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন লিখেছেন, খেলা হবে। এর থেকেই অনুমান করা হচ্ছে জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসও তৃণমূলের পাশে থাকবে।
https://twitter.com/INCIndia/status/1419186905749458946?s=20
https://twitter.com/derekobrienmp/status/1419192373276467201?s=20
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত দখলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র বাসন্তী, গুলিবিদ্ধ ৩
এখন বাদল অধিবেশন চলছে সংসদে। সেখানেও যেতে পারেন মমতা। কারণ তাঁকে সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছে তৃণমূল। সংসদে গেলে শুধু পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন না কি অন্য কোনও ভূমিকায় দেখা যাবে তৃণমূল নেত্রীকে তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন-বাবার মৃত্যুর ২৫ বছর পর পুলিশে চাকরি জন্মান্ধ ছেলের
যদিও মমতার এই সফরকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ২০১৯ সালেও বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। ব্রিগেডে র্যালিও করেছিলেন। লোকসভার ফলাফল সকলেই দেখেছিল। ওঁর নিজের দলেই খুনোখুনি। ২৪-এর ভোটে লড়তে পারবেন কি না সন্দেহ। আর যেভাবে রাজ্যের ঋণের বোঝা বাড়ছে, সরকার চালানোর পরিস্থিতি নেই। তাই মোদির কাছে হাতজোড় করতে যাচ্ছেন।”