কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যত নিয়ে মাসখানেক ধরে টানাপোড়েন চলছে। জোটের শরিকরা প্রকাশ্যেই একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) বেশ কয়েকবার মোর্চা ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছে। কংগ্রেসের অবস্থানও স্পষ্ট করেনি বিধান ভবন। সিপিএম আবার ভরাডুবির জন্য আইএসএফকেই কাঠগড়ায় তুলেছে।
জোটে আইএসএফকে সামিল করা নির্বাচনে ভরাডুবির অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে। সিপিএমের বক্তব্য, আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর ভাবমূর্তি দলে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আইএসএফ নিজেদের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ বলে দাবি করলেও বাংলার সাধারণ ভোটারদের কাছে আব্বাসের দল ‘মুসলিম সংগঠন’ হিসেবে পরিচিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনের পরেই সম্ভবত মধুচন্দ্রিমা শেষ, রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোট ‘বিশ বাঁও জলে’
সীতারাম ইয়েচুরির সাংবাদিক সম্মেলনেও প্রায় একই কথা বলেছেন। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ইয়েচুরির বক্তব্যকে কটাক্ষ করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক দলের নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান আছে। ব্রিগেড মিটিংয়ে ঘোষণা হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চা নির্বাচনী জোট নয়। এটা আন্দোলনের মঞ্চ।’
সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন ভাঙরের বিধায়ক। সিপিএম চাইলে মোর্চা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। নওসাদের কটাক্ষ, ‘এখন সিপিএম উল্টো পথে হাঁটছে। যারা শাসকদলের চাটুকারিতা করছে, তাদের নিয়ে সংযুক্ত মোর্চা চলতে পারে না। সিপিএম সংযুক্ত মোর্চার মালিক নয়। যার ইচ্ছে চলে যাক।’
আরও পড়ুন: ত্রিপুরার বিজেপি সরকার আর তালিবান সরকার এক, কটাক্ষ তৃণমূলের
সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা হলেও কোনও সিদ্ধান্ত আসতে পারেনি দল। সূত্রের খবর, আসন্ন উপনির্বাচন পর্যন্ত সংযুক্ত মোর্চার ব্যানারেই লড়বে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ। পুরোনো ফর্মুলা মেনেই ৭টি আসনে প্রার্থী দেবে তারা। তবে তারপর মোর্চার ভবিষ্যত কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত। শুক্রবার আইএসএফ বিধায়কের মন্তব্যে সেই জল্পনা আরও বাড়ল।