হাওড়া: দলের রাজ্য সভাপতি তাঁকে বহিষ্কার করলেও নিজের দাবিতেই অনড় রইলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা৷ ‘শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খোলা’, বহিষ্কার করার মতো কোনও কাজ কাজ নয় বলেও দাবি সুরজিতের৷ বুধবার সন্ধেয় কলকাতা টিভি ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত বহিষ্কারের কোনও খবর আমি পাইনি৷ দলের বিরুদ্ধে এমন কোনও কাজ করিনি যে দল আমাকে বহিষ্কার করবে৷ বহিষ্কার করতে গেলেও একটা নিয়ম আছে৷’ যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নাম উল্লেখ করে সুরজিৎকে বহিষ্কারের চিঠিতে দল বিরোধী ও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায় উল্লেখ করা হয়েছে৷ সেই চিঠিতে বিজেপির হয়ে সই করেছেন দলের রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিজেপির পুরনো কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন বেড়েই চলেছে৷ সেই ক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢেলে দেন শুভেন্দু নিজে৷ পুরভোটের আগে মঙ্গলবার কলকাতা ও হাওড়া জেলাকে নিয়ে নির্বাচন কমিটি তৈরি করে বিজেপি৷ তখন বিধানসভা ভোটে হাওড়া জেলায় বিপর্যয়ের দায় বিজেপির কর্মীদের ঘাড়ে চাপান শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, বিজেপি হাওড়ায় হেরেছে৷ কারণ, তৃণমূলের মন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে দলের প্রার্থীদের যোগাযোগ ছিল৷
শুভেন্দুর মুখে এমন কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছেন হাওড়ার বিজেপি নেতারা৷ জেলার বিজেপি সভাপতি প্রকাশ্যেই তাঁকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন করেন৷ শুভেন্দুর অভিযোগ নস্যাৎ করে চ্যালেঞ্জের সুরে এদিন সুরজিৎ বলেন, ‘আগে প্রমাণ করুন আপনি কতটা সৎ৷’ কলকাতা টিভি ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারেও নাম না করে হাওড়ার আর এক বিজেপি নেতা রথীন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন সুরজিৎ৷ তিনি বলেন, ‘হাওড়ায় বহু পুরনো বিজেপি কর্মী আছেন৷ তাঁকে চেয়ারম্যান করা হোক৷ কিন্তু, যে লোকটা নিজের বুথ জেতে না৷ বাড়ির সামনের পোস্টার সরাতে পারে না৷ তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে৷’
আরও পড়ুন – কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে গোটা রাজ্যে একসঙ্গে পুরভোট চাইছে বিজেপি
সুরজিৎকে পাঠানো বহিষ্কারের চিঠি
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তিনি আরও বলেন, ছ’মাস আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারীর কাছ থেকে দলের কর্মীদের সততার সার্টিফিকেট চাই না৷ বরং, তাঁকে প্রমাণ করতে হবে তিনি কত বড় সৎ নেতা৷ নারদ কাণ্ডে তাঁকেই দেখা গিয়েছে টাকা নিতে৷ বিজেপির কোনও কর্মকর্তাকে নয়৷ এরপর শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে সুরজিৎ বলেন, বিজেপিতে এসে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের যে বি-টিম তৈরি করছেন সেখানে হাওড়া কোনও কর্মকর্তা কাজ করবে না৷
আরও পড়ুন – নন্দীগ্রামে তৃণমূলের নিশানায় অধিকারীরা, শুভেন্দুকে মীরজাফর বলে আক্রমণ কুণালের
এরপরেই সুরজিৎ সাহার বিরুদ্ধে দল বিরোধী কার্যকলাপ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায় ভার চাপিয়ে দেয় বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নাম উল্লেখ করে সুরজিৎকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বহিষ্কার করা হয়।
যদিও সুরজিতের বক্তব্য,‘ আমি নির্বাচিত সভাপতি। আমাকে সরাতে গেলে প্রথম শোকজ করতে হবে। শোকজের সঠিক জবাব দিতে পারলে তখন বহিষ্কার করে পারে। কিন্ত, এখনও কোনও চিঠি পাইনি। তাই, বহিষ্কারের বিষয়টি নিয়ে ভাবছি না।’