রাজ্য রাজনীতিতে নয়া জল্পনা উসক দিল উত্তরবঙ্গের দুই রাজনৈতিক ব্যক্তির বৈঠক। একান্তে বৈঠকে বসলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুই শীর্ষ নেতা বিমল গুরুং এবং বিনয় তামাং। দার্জিলিং-এর সিঙ্ঘাহার এলাকার পাতাবাং গেস্ট হাউসে চলছে সেই বৈঠক।
আরও পড়ুন- তারাপীঠের হোটেল থেকে ঝাঁপ, চিকিৎসা না করিয়ে যুবককে বেঁধে রাখল স্থানীয়রা
দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি অনেকদিনের। সেই রাজ্যের নামকরণ করা হবে গোর্খল্যান্ড। এই গোর্খল্যান্ডের দাবিতে বাম জমানায় অনেক আন্দোলন হয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে পৃথক গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(GTA) গঠন করেন মমতা।
আরও পড়ুন- যোগীরাজ্যে ফের গনপিটুনির শিকার যুবক, ভিডিও ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়
তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে GTA গঠনের পরে উত্তরবঙ্গের সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। ২০১৭ সালে ফের মাথাচাড়া দিতে শুরু করে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন। যার নেতৃত্বে ছিলেন বিমল গুরুং। সেই সময়ে আন্দোলনকারীদের হাতে প্রাণ হারাতে হয় পুলিশকর্মী আমিতাভ মালিককে। সেই সময় থেকেই থিতিয়ে পরে আন্দোলন। আর ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বিমল গুরুং গা ঢাকা দেয়।
আরও পড়ুন- অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হতে পারে পানশালা, হুমকি হোটেল ও বার অ্যাসোসিয়েশনের
একগুচ্ছ মামলা দায়ের করা হয় বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে। সেই সময়ে বিমল এবং বিনয়ের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। তার আগে থেকেও দূরত্ব ছিল ওই দুই গোর্খা নেতাদের। অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর পরে সেই দূরত্ব আরও বড় হয়েছিল। আর সেই সময়ে বিনয় তামাং-এর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় এসে তৃণমূলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন বিমল গুরুং।
সেই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল বিনয় তামাং-এর অবস্থান নিয়ে জল্পনা। কলকাতায় ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই অবস্থাতেই বিধানসভা ভোট সম্পন্ন হয়েছে। উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনের থেকে ভালো ফল করেছে তৃণমূল। তবে দার্জিলিং-এর বাইরেও অনেক জায়গায় আসন পেয়েছে বিজেপি। বিজেপির সঙ্গে গোর্খানেতাদের পুরনো বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই সঙ্গে বিজেপি ছোট রাজ্যের পক্ষপাতী। দার্জিলিং লোকসভা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি দখলে রেখেছে গোর্খানেতাদের সমর্থন নিয়ে।
আরও পড়ুন- হিন্দু মেয়েদের মেহেন্দি পরাতে পারবে না মুসলিম যুবক, লাভ জেহাদ আটকাতে ব্যবস্থা ক্রান্তি সেনার
সপ্তাহ খানেক আগে উত্তরবঙ্গের সাংসদ জন বার্লা পৃথক রাজ্যের দাবিতে সওয়াল করেছিলেন। তারপরেই এই নিয়ে অনেক বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এই অবস্থায় যুযুধান দুই গোর্খ নেতাদের বৈঠক ঘিরে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা। এই বৈঠকের উপরে রাজ্য রাজনীতির অনেক সমীকরণ নির্ভর করছে তা বলাই বাহুল্য।
যদিও এদিনের বৈঠকের পরে দুই পক্ষ থেকেই দাবি করা হয়েছে যে নেহাতই বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। তবে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলেছে প্রায় ৪৫ মিনিট। এদিনের বৈঠকের পরে বিনয় তামাং বলেছেন, “প্রায় এক ঘণ্টা আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা একান্তে কথা বলেছি। অন্য কেউ সেখানে ছিল না। সাধারণ জনতার উন্নতি নিয়ে কথা হয়েছে। এর বেশি এখন কিছু বলা যাবে না।”