কলকাতা: তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই দিল্লি ছুটে গিয়েছিলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য একাধিকবার স্পিকারের কাছে সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু সময় মেলেনি। ফলে বাবুলের ইস্তফার বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। এরই মধ্যে স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে সময় চাইলেন বাবুল।
শুক্রবার বাবুল চিঠি দিয়েছেন স্পিকারকে। শনিবার টুইটে নিজেই সে কথা জানালেন আসানসোলের সাংসদ। তৃণমূলের তারকা প্রচারকের তালিকায় তাঁকে রাখা হয়নি কেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন টুইটে। বাবুল লিখেছেন, আমি এখনও বিজেপি সাংসদ। পদত্যাগ করার অনুরোধ জানিয়ে ফের স্পিকারকে চিঠিই দিয়েছিল। সময় মিললেই নিয়মমাফিক পদত্যাগ করব।
আরও পড়ুন: মমতাকে পুজো উপহার বাবুলের, দিদির পছন্দ মাথায় রেখে দিলেন নীল রঙের পিয়ানিকা
অক্টোবরের শুরুতে লোকসভার সচিবালয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছিল, পদত্যাগ ঘোষণার পর স্পিকারের সঙ্গে যোগাযোগই করেননি বাবুল সুপ্রিয়। এর পাল্টা টুইট করে স্পিকারের সময় চাওয়ার চিঠি পোস্ট করেন বাবুল। বাবুল লেখেন, মাননীয় স্পিকারের কার্যালয়ে আমি সাক্ষাতের সময় চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। সেই চিঠির একটি প্রাপ্তিস্বীকারও করা হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, বাবুল সাংসদ পদ ছাড়তে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করার কারণ কী? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলত্যাগ করেই বাবুল লোকসভার সাংসদ পদ ছাড়ার বার্তা দেওয়ায় চাপে পড়ে গিয়েছেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। বাবুলের ইস্তফা গৃহীত হলেই এই দু’জনের সাংসদ পদ খারিজে চাপ বাড়াবে তৃণমূল। বিষয়টা আঁচ করতে পেরেই ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছেন স্পিকার।
কাঁথি এবং তমলুকের দুই সাংসদ এ বার লোকসভার বাদল অধিবেশনে যোগ দেননি। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই তাঁদের গতিবিধি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে বিজেপি সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছিলেন তাঁরা। কাঁথিতে অমিত শাহের সভামঞ্চে শিশিরকে দেখা গিয়েছিল। আবার হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর একটি সরকারি কর্মসূচির মঞ্চে হাজির ছিলেন দিব্যেন্দু।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে দিদির গানে ব্যস্ত বাবুল, পাখি-কুকুরেরা কলকাতা ফিরছে বিশেষ ট্রেনে
অমিতের সভায় যোগদানের ছবি দেখিয়ে শিশিরের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখেছে তৃণমূল। দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে তেমনটা করতে পারেনি রাজ্যের শাসকদল। দিব্যেন্দু অবশ্য বিজেপি ঘনিষ্ঠতার কথা মানতে চাননি। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘আমি এবং বাবা (শিশির)— দু’জনেই তৃণমূলে আছেন। অন্য কোনও দলে যাননি। যাওয়ার প্রশ্নও নেই।’