‘গদ্দার’ অর্জুন এবার মুকুলের দলে। না, অভিষেকের দলে। না, তৃণমূল কংগ্রেসে। না, মমতার কাছে।
ভাটপাড়ার অর্জুন কাহিনীকে এভাবেই বোধহয় বর্ণনা করা যায়। যে মুকুলকে ‘গদ্দার’ বলেছিলেন, সেই মুকুলের হাত ধরেই পদ্মাসনে বসা। বিজেপি থেকে মুকুল ঝড়েছে অনেকদিন আগেই। এবার তৃণমূলের চারবারের বিধায়ক অর্জুন সিং ফিরে এলেন তৃণমূলে। যিনি অভিষেককে একসময় ‘ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করতেও পিছপা হননি! রবিবাসরীয় বিকেলে সেই ভাইপোর হাত ধরেই ফুলবদল করলেন অর্জুন।
পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলে আসা অর্জুনের রাজনৈতিক রথের চাকা ঘুরেছিল কংগ্রেস কাউন্সিলর হিসেবে। ১৯৯৫ সালে ভাটপাড়া পুরসভা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জেতেন তিনি। এর পর অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন অর্জুন। ২০০১ সালে তৃণমূলের টিকিটে ভাটপাড়া থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৬, ২০১১, ২০১৬ সালেও ভাটপাড়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয় পান তিনি।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: যাঁরা দলকে দাঁড় করিয়েছেন, তাঁরা বিজেপিতেই আছেন: দিলীপ
এর মাঝে অবশ্য হোঁচট খেতে হয়েছে অর্জুনকে। ২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে লড়েন। তবে সিপিএমের হেভিওয়েট নেতা তড়িৎবরণ তোপদারের কাছে হেরে যান। তৃণমূলের হিন্দি উইংয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন অর্জুন সিং। ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুনকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পঞ্জাবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তবে তার মধ্যেই লোকসভা ভোটের টিকিট নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধ বাধে তাঁর।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন সিং। বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর লোকসভা থেকে জয় পান। হারান তৃণমূলের ওজনদার প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে। এর পর একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যে অর্জুন লোকসভা ভোটের টিকিট পাবেন না বলে তৃণমূল ছেড়েছিলেন, সেই অর্জুনই ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের টিকিট পাকা করতে তৃণমূলের শরণাপন্ন হলেন!