আলিপুরদুয়ার: গৌহাটি থেকে ট্রেনে করে বিহারে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। মহিলা ছিলেন অন্ত:সত্ত্বা। হঠাৎই অসুস্হ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে নেমে যান তাঁরা। সন্তানসম্ভবা মা প্ল্যাটফর্মে তখন ব্যথায় কাতর। বিষয়টি রেলের আরপিএফের এক মহিলা কনষ্টেবলের নজরে আসে। তড়িঘড়ি তিনি বিষয়টি রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান (Indian Railways)।
ঘটনাচক্রে আরও বেড়ে যায় মহিলার প্রসব যন্ত্রণা। তাঁকে ৩ নম্বর প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেনের এস-৮ কামরায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বিহারের বাসিন্দা নেহাদেবী নামাক ওই অন্ত:সত্তা মহিলা এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। ওই অবস্থায় মা এবং নবজাতক শিশুকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে, তাঁদের ট্রেনের কামরাতেই রাখা হয়।
আরও পড়ুন: কার্ডিয়াক সার্জারি রাজ্যপালের, রাজভবনে ফিরছেন আজ
ইতিমধ্যেই প্ল্যাটফর্মে বহু মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে এগিয়ে আসে রেল কর্তৃপক্ষ। খবর দেওয়া হয় রেল হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সদের। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও মা এবং শিশুর কথা ভেবে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। আসেন রেলের আধিকারিকরা। প্লাটফর্মের পাশে অ্যাম্বুল্যান্স ও স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করা হয়।
আলিপুরদুয়ার জংশন রেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মা ও শিশুর চিকিৎসা শুরু করেন। অবশেষে চিকিৎসকরা সদ্যজাত শিশু এবং তার মা’কে নিয়ে ট্রেনের কামরা থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁরা বেরোতেই প্লাটফর্মে থাকা যাত্রী ও অন্যান্য রেলকর্মীরা করতালির মাধ্যমে তাঁদের স্বাগত জানান। ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেলেও মা ও শিশুর কথা ভেবে তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। রেলের অ্যাম্বুলেন্সে সদ্যোজাত শিশু এবং মা’কে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান রেলকর্মীরা।
এরপরই তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেন নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সম্পূর্ণ ঘটনায় তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেন নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ঘটনায় রেল দফতরকে কুর্নিশ জানান প্ল্যাটফর্মে থাকা রেল যাত্রীরা।
দেখুন আরও খবর: