কলকাতা: চন্দ্রবিজয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সৌর অভিযান। আগামী শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ইসরোর মহাকাশযান আদিত্য এল ১ (Aditya L1)। ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট ১-এ (Lagrange Point 1) গিয়ে থিতু হবে সে। এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে চার মাস মতো। যথাস্থানে পৌঁছনোর পর পাঁচ বছর ধরে সূর্য এবং মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করবে আদিত্য এল১।
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টের মাহাত্ম্য কী?
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট হল এমন জায়গা যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুটি মহাজাগতিক বস্তুর অভিকর্ষজ বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য থাকে। এই জায়গাগুলোতে কোনও জ্বালানি ছাড়াই মহাকাশযান এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে। তাকে সূর্য নিজের দিকে আকর্ষণ করতে পারে না আবার পৃথিবীও নিজের দিকে টেনে নিতে পারে না। পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে এল ১ (L1) থেকে এল ৫ (L5), মোট পাঁচটি এমন স্পট আছে। পৃথিবীর সবথেকে কাছে এল ১ এবং এল ২, এই দুই জায়গা পর্যবেক্ষণের জন্য ভালো। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপ নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এল ২ পয়েন্টে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরোর সৌর অভিযানে সাহায্য করছে দেশীয় প্রযুক্তি, জানালেন অধিকর্তা
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট ১-এ পৌঁছে হ্যালো অরবিটে (Halo Orbit) গিয়ে থিতু হবে আদিত্য এল ১ মিশনের মহাকাশযান। সেখানে বসে মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কে গবেষণা চালাবে আদিত্য এল ১। এছাড়াও সূর্যের তাপমাত্রার বিভিন্ন বিষয় যেমন করোনাল হিটিং, করোনাল মাস ইজেকশন, প্রি-ফ্লেয়ার ইত্যাদি বিষয়ে অজানা তথ্য জানার চেষ্টা চলবে। সূর্যের করোনা অর্থাৎ সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবথেকে বাইরের অংশ কেন তার কেন্দ্রের থেকেও বেশি উত্তপ্ত এই রহস্যের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালাবে আদিত্য এল ১।
গবেষণা করার জন্য মহাকাশযানে থাকছে বিভিন্ন যন্ত্র যাকে পেলোড (Payload) বলা হয়। চন্দ্রযান ৩-এর রোভার প্রজ্ঞানের (Pragyan) চারটি পেলোড রয়েছে। আদিত্য এল ১-এর একটি প্রধান পেলোড থাকবে। এছাড়াও থাকবে আরও ছ’টি পেলোড। আনন্দের বিষয় হল এই সমস্ত পেলোড তৈরি করেছে দেশীয় সংস্থাই।
প্রধান পেলোডটি বানিয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (Indian Institute of Astrophysics)। আমেদাবাদের স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের (SAC) অধিকর্তা নীলেশ দেশাই বলেছেন, “প্রধান পেলোড ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বানিয়েছে, তবে তারা একাই এগুলো বানায়নি। আরও একাধিক ছোটখাট প্রতিষ্ঠানকে বাকি ছ’টি পেলোড তৈরি করেছে। এটাই আদিত্য এল ১ মিশনের বিশেষত্ব।”