নয়াদিল্লি: গান্ধী পরিবার নিয়ে ফের অস্বস্তিতে বিজেপি। সোমবার টুইটার সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় থেকে নিজের পরিচয় বোঝাতে ‘বিজেপি’ শব্দটিকে মুছে ফেললেন বরুণ গান্ধী। উত্তরপ্রদেশের পিলভিটের এই বিজেপি সাংসদের এমন পদক্ষেপে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা।
তবে কি আগামী উত্তর প্রদেশ ভোটের আগেই গেরুয়া শিবির ছাড়তে চাইছেন বরুণ? নাকি ভাই রাহুলের ‘ হাত’ শক্ত করতে কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরবেন তিনি? আবার কি ভারতীয় রাজনীতিতে পুনর্মিলন হবে গান্ধী পরিবারের দুই ভাইয়ের? এই সমস্ত প্রশ্নই সোমবার ঘুরপাক খাচ্ছে নেট দুনিয়ায়।
ভার্চুয়াল জগতের প্রশ্নগুলি জাতীয় রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে সেটা সময় বলবে। তবে তার আগে লাখিমপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কে বরুণ গান্ধীর ‘পত্রাঘাত’ সেই বিষয়টি ইঙ্গিত করছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বরুণ গান্ধী টুইটার থেকে মুছে ফেলেছেন ‘বিজেপি’ কথাটি
সোমবার লাখিমপুর খেরির ঘটনাটিকে হৃদয়বিদারক বলে দাবি করেছেন তিনি। নিহত কৃষকদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে।
পাশাপাশি তিনি চিঠিতে আরও বলেন, “আমাদের উচিত প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে সংযম ও ধৈর্য সহকারে আচরণ করা। কৃষকদের সংবেদনশীলতা সঙ্গে গান্ধীবাদ ও গণতান্ত্রিক আইনের মাধ্যমেই গোটা বিষয়টি সমাধান প্রয়োজন।”
এই সমস্ত ঘটনা থেকে আগামী দিনে বরুণ গান্ধীর রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে কিছুটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মোদি-শাহদের শিবির থেকে বেরিয়ে অদূর ভবিষ্যতে কাকাতো ভাই রাহুল ও কাকিমা সোনিয়ার হাত ধরতে পারেন বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আরও পড়ুন: টার্গেট বিজেপি শূন্য উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়ু হাতে সাফাই অভিযানে প্রিয়াঙ্কা
আগামী বছরই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই কৃষক আন্দোলন সহ একাধিক ইস্যুতে ইতিমধ্যেই কোণঠাসা যোগী সরকার। তার মধ্যে সম্প্রতি লাখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে আরো বেকায়দায় পড়তে হয়েছে যোগী প্রশাসনকে। ২০১৭ সালে মোদি ঝড় হিন্দুত্ববাদের ধ্বজা উড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু গত পাঁচ বছরে যমুনা নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে হাজারো মৃতদেহে দূষিত হয়েছে ‘গঙ্গা যমুনার জল। ‘ তাই মানুষের বিশ্বাস অনেকটাই কমেছে বিজেপি প্রশাসনের ওপর। জনপ্রিয়তা এক ধাক্কায় অনেকটাই হারিয়েছেন যোগী। উত্তরপ্রদেশকে কেন্দ্র করেই চলতে পাকাচ্ছে দেশের বিরোধীরা। এমন পরিস্থিতিতে বরুণ গান্ধীকে হারানো উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বরুণ গান্ধী । সেই সময় প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়িকে মুখ করেই নির্বাচনে গিয়েছিল বিজেপি। যদিও তারপর সেই ফলাফল সকলেরই জানা। তারপর ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে পিলভিট থেকে প্রথম সংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময়ে একটি সাক্ষাৎকারে বরুণ গান্ধী বলেছিলেন, যেদিন তিনি বিজেপি থেকে ইস্তফা দেবেন সেদিনই একজন রাজনীতিক হিসেবে তার জীবন শেষ হবে। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে তাঁর সেই মন্তব্য কথাটা যথাযথ তা সময়ই বলবে।