কলকাতা: মহিলারা সাবধান! ত্বকের ফেয়ারনেস ক্রিমের (Fairness Cream) ব্যবহার বাড়ছে কিডনির সমস্যা (Kidney Problems)। এক গবেষণায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। যা দেখে চমকে উঠলেন গবেষকরা। মহিলারা নিজেদের সুন্দর দেখাতে নানান প্রসাধনী জিনিস ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে ত্বক ফর্সা করতে ফেয়ারনেস ক্রিমগুলির ব্যবহার করে থাকেন। গায়ের রং একটু চাপা হলেই ভিড় জমে প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে। টিভি হোক বা দোকানের বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ফেয়ারনেস ক্রিমের রমরমা এবং সেই ট্র্যাডিশন এখনও চলছে ভারতে। কিন্তু এখানেই গবেষকরা সতর্ক করেছেন। এই এসব ক্রিমে বিপুল পরিমাণ পারদ মিশ্রিত থাকে। যা প্রতিনিয়ত ব্যবহার ডেকে আনতে পারে কিডনির সমস্যা। ক্ষতি করে পারে কিডনী।
মেডিক্যাল জার্নাল কিডনি ইন্টারন্যাশনাল-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতী মাত্রায় পারদযুক্ত থাকে ফেয়ারনেস ক্রিম। আর প্রতিনিয়ত এই ক্রিমের ব্যবহার কিডনি ফিল্টারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্রোটিন ফুটো করে। গবেষকরা বলছেন, ক্রিমে থাকা এই পারদ ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয়। এবং কিডনির ফিল্টারে ক্ষতি করে। যার ফলে নেফ্রোটিক সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পায়। অটোইমিউন রোগ দেখা দেয়। যার ফলে নেফ্রোটিক সিনড্রোম হয়- একটি কিডনি ব্যাধি যা প্রস্রাবে প্রচুর প্রোটিন নিঃসরণ করে। এক গবেষক ডঃ সজীশ সিভাদা একটি পোস্টে লিখেছেন, এই ক্রিমগুলি, ভারতের অনিয়ন্ত্রিত বাজারে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। দিনে দিনে এর চাহিদাও বাড়ছে। দ্রুত ফলাফলের প্রতিশ্রুতি দেয় প্রস্তুতকারক সংস্থা। কিন্তু কি মূল্যে? ব্যবহারকারীরা প্রায়ই আসক্তি পড়ে যান। কারণ ব্যবহার বন্ধ করলে ত্বক আরও কালো হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ফেয়ারনেস ক্রিমে লুকিয়ে রয়েছে কিডনির অসুখ? রিপোর্টে চাঞ্চল্য
সমীক্ষা বলছে, জুলাই 2021 থেকে সেপ্টেম্বর 2023 এর মধ্যে রিপোর্ট করা MN এর ২২ টি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে। রোগীদের অ্যাস্টার এমআইএমএস হাসপাতালে উপসর্গগুলি চিহ্নিত করে। ডাক্তারা চিহ্নিত করেন, প্রায়শই ক্লান্তি, হালকা শোথ এবং প্রস্রাবের বৃদ্ধির। মাত্র তিনজন রোগীর গ্রস এডিমা ছিল, কিন্তু সকলের প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। একজন রোগীর সেরিব্রাল ভেইন থ্রম্বোসিস, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই রেনাল ফাংশন সংরক্ষিত ছিল। ১৫ জন রোগীর মধ্যে, ১৩ জন উপসর্গ শুরু হওয়ার আগে স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করেছেন। বাকিরা নানা ওষুধ খাওয়ার ফলেই এই রোগের আক্রান্ত হয়েছেন। “অধিকাংশ কেসে দেখা গিয়েছে ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করার পরই সমাধান করা হয়েছে রোগের। এটি একটি সম্ভাব্য জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে। এই ধরনের পণ্য ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে জনসচেতনতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই বিপদ রোধে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা অপরিহার্য,” বলেছেন গবেষকরা।