কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মঙ্গলবারে পেশ করা ২০২২-২০২৩ অর্থ বর্ষের বাজেটে (Union Budget) নয়া চমক। এবারের বাজেটে নজর দেওয়া হল মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে। গত কয়েকবছর ধরে করোনা কালে ঘরবন্দি রয়েছেন সকলে এই পরিস্থিতিতে সকলের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে বিশেষ মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য টেলি-চিকিৎসা পরিষেবার (National tele-mental health programme) চালু করার কথা ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Union Budget 2022)।
২০২০ সাল থেকে শুরু হয়েছে করোনা অতিমারি। যার জেরে প্রায় দু’বছর ধরে বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ, এমনকী অফিসও। ঘরবন্দি হয়ে কাটছে বেশিরভাগ সময়। অফিসের কাজও চলছে বাড়ি থেকেই। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে দ্রুত। ঘিরে ধরছে অবসাদ। স্কুল বন্ধ থাকায় অবসাদের শিকার হচ্ছে শিশুরাও। করোনা পরিস্থিতিতে টান পড়েছে অর্থনীতিতে। চাকরি খুইয়েছেন অনেকে। ফলে অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় পড়েছেন অনেকে। অনেকে আবার ভুগছেন একাকীত্বে। ফলে, বেড়ে যাচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা।
এই পরিস্থিতিতে অনেকের পক্ষেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া সম্ভব হয় না। কারণ অনেকেই বুঝতে পারেন না কোন চিকিৎসকের কাছে যাবেন। কিংবা আদেও তাঁর কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না। ফলে সময়মত চিকিৎসা পান না তাঁরা।
আরও পড়ুন- PM Gati shakti: তিন বছরে ৪০০ বন্দে ভারত ট্রেন, ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর
এই সব দিক বিবেচনা করে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়েছে কেন্দ্র। ২০২২ অর্থবর্ষের বাজেটে মেন্টাল হেলথের বিষয়টি রাখা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সরকার সকলের জন্য জাতীয় মেন্টাল হেল্থ প্রোগ্রাম শুরু করবে। যার ফলে ফোন করলেই মিলবে বিশিষ্ট চিকিৎসকের মতামত, পরামর্শ। এমনকী ভিডিয়ো কল কিংবা ভয়েস কলের মাধ্যমেও চালানো যাবে কাউন্সেলিংয়ের সেশন।
এই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে দেশজুড়ে ২৩টি টেলি মেন্টাল হেলথ সেন্টার তৈরি হবে। আর এই টেলি মেন্টাল হেলথ পরিষেবার প্রযুক্তিগত দিক উন্নত করতে সাহায্য করবে আইআইআইটি (International Institute of Information Technology) বেঙ্গালুরু ।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট মনোবিদ দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি বলেন , ” অতিমারির আবহাওয়ায় বলা যেতে পারে এটা খুবই ভাল এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ, তবে বিষয়টি বাস্তবায়িত হতে বেশ কয়েকটি বাধা আসতে পারে। যেমন অনেকে ঠিক ঠাক ইন্টারনেট কানেকশন পায় না, অনেকে আবার মনোবিদদের সঙ্গে ক্লিনিকে সামনা সামনি কথা বলতে চায় আবার দেশে এমন সব প্রত্যন্ত জায়গা আছে যেখানে এখনও ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছায়নি। তবে, এই সব বাধা অতিক্রম করে এই মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম যদি বাস্তবায়িত করা হয় নিঃসন্দেহে বহু মানুষ উপকৃত হবে। আমাদের জনসংখ্যা যা সেই তুলনায় মানসিক সমস্যগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা এই কোভিডকালে নানান জটিলতার কারনে কয়েকগুণ বেড়েছে, সেই তুলনায় মনোবিশেষজ্ঞদের সংখ্যা যথেষ্ট কম সেই জায়গা থেকে এটাকে কোভিডকালে বেটার নিউ নর্মাল বলা যেতে পারে”।
(দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, কনসালটেন্ট জেরিয়াট্রিক সাইকিয়াট্রিস্ট, কলকাতা অ্যান্ড মেম্বার, ইন্টারন্যাশনাল সাইকোজেরিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন)