কোটা: রাজস্থানের (Rajasthan) কোটায় (Kota) ফের আত্মহত্যার ঘটনা। এবার আত্মঘাতী ১৮ বছরের এক ছাত্রী। জানা যায়, ওই ছাত্রীর বাবা-মা (Parents) তার জন্য একটি নতুন বাড়ি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই হস্টেলের ঘরে (Hostel Room) আত্মহত্যা করেন তিনি।
পুলিশ (Police) জানিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম শেমবুল পারভিন। বিহারের চম্পারনের বাসিন্দা। কোটায় থেকে তিনি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এক বছর আগে কোটার একটি কোচিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানকারই একটি হস্টেলে থাকতেন ওই তরুণী। সম্প্রতি মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন তাঁর বাবা-মা। গত মঙ্গলবার মেয়েকে হস্টেলে রেখেই তার জন্য নতুন একটি বাড়ি দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ফিরে এসে দেখেন, ঘরের দরজা বন্ধ। হস্টেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। তবে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি ঘর থেকে।
আরও পড়ুন:Parliament-Adani Row | কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটে নেই তৃণমূল, ভিন্ন পথে আন্দোলন
শেমবুলের মা (Shembul Parveen) জানান, পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার জন্য তাঁদের মেয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মনমরা ছিল। তাছাড়া হস্টেলের খাবার নিয়েও হতাশ ছিল সে। অভিযোগ, হস্টেলে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হত। যখন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা দেখা করতে আসতেন, তখন তাঁদের সামনে শুধু ভালো খাবার পরিবেশন করা হত। মৃত ছাত্রীর বাবা বলেন, কোচিং ক্লাসে যাওয়ার আগে যাতে ভালো খাবার পাওয়া যায়, সেজন্য মেয়ে চাইত, আমরা যেন ওর সঙ্গেই থাকি। মেয়ে পড়াশোনাতেও ভালো ছিল বলে দাবি শেমবুলের বাবার।
কোটায় ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মহত্যার ঘটনা নতুন নয়। মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্স পরীক্ষার চাপ সামলাতে না পেরে অনেক পড়ুয়াই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। গতকালই তৃতীয় বর্ষের এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র আইআইটি মাদ্রাজ ক্যাম্পাসে তাঁর হস্টেলের ঘরে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। সহপাঠীরা ঘরের দরজা ভেঙে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
উল্লেখ্য, কোটা ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত। প্রতি বছর এখানকার কোচিং সেন্টারগুলিতে কয়েক হাজার পড়ুয়া ভর্তি হয়। এই ধরণের ঘটনায় রাজস্থান সরকার একটি বিল আনার কথাও ভাবছে। যেখানে প্রতি বছর রাস্তার মোড়ে মোড়ে জয়েন্টে সফল পরীক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। কারণ সরকার মনে করছে, এতে পড়ুয়াদের মনে অযথা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে এই চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। পাশাপাশি পর্যবেক্ষকরা কোচিং সেন্টারগুলিতে নিয়মিত যাতায়াত করবেন। পড়াশোনার পরিবেশ কেমন, ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকের অনুপাত ইত্যাদি বিষয়গুলিও দেখার কথাও ওই বিলে বলা হয়েছে।