ওয়েব ডেস্ক: পাকিস্তানে একাধিকবার অল্প সময়ের ব্যবধানে গিয়েছিল জ্যোতি। সম্প্রতি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত ইউটিবার জ্যোতি মালহোত্রাকে (Jyoti Malhotra) জেরা করে এই তথ্য হাতে পেয়েছে তদন্তকারীরা। জেরা করে বড় তথ্য হাতে পেয়েছে তদন্তকারীরা। পাকিস্তানি প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও উঠে এসেছে তদন্তে। ওই সূত্র ধরেই ইউটিউবারের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কোথা থেকে, কীভাবে অর্থ এসেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে ৷ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু লেনদেন সন্দেহজনক বলে অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। তা নিয়ে এখন জোরকদমে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, তদন্তের প্রয়োজনে হরিয়ানা পুলিশের একটি বিশেষ দল দিল্লিতে (Delhi) হাজির হয়েছে।
একসময় দেশের রাজধানী শহরেই বাস করত জ্যোতি। সেই সূত্রে দিল্লিতে তার পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ ৷ দিল্লিতে বসবাসের সময়ে কাদের সঙ্গে তার পরিচয় ছিল তা জানতে চাইছেন তদন্তকাকরীরা৷ তদন্তের একবারে প্রথম দিকেই জ্যোতির পাকিস্তান যাতায়াতের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। জ্যোতি জানিয়েছে, পাকিস্তান সফরের ভিসা পেতে ২০২৩ সালে সে পাক হাইকমিশনে গিয়েছিল৷ সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের৷ দুজনের মধ্যে মোবাইল নম্বর (Phone Number) আদান-প্রদান হয়। এমনকি তাদের মধ্যে ফোনে কথাবার্তাও চলত। পরবর্তীতে দানিশের সূত্র ধরেই বহুবার পাকিস্তান যায় জ্যোতি।
আরও খবর:ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আটক নুসরত ফারিয়া!
পাকিস্তানে দানিশের পরিচিত আলি আহওয়ান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয় হরিয়ানার ইউটিউবারের (Hariyana’s Youtuber)৷ ওই ব্যক্তি আবার জ্যোতির থাকা-খাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। তার সূত্রেই জ্যোতির আলাপ হয়েছিল পাক-প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ কর্তার সঙ্গে। জ্যোতির নিজস্ব ভ্রমণ বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল (Youtube Channel) ‘ট্রাভেল উইথ-জো’-তে পাক সফরের একাধিক অভিজ্ঞতার ছবি ভাগ করে নিয়েছিল সে। কয়েকটি সূত্র ব্যবহার করে জ্যোতি মালহোত্রা পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা ও বর্তমান পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ শরিফের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুরে’ নিহত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে ফুল পাঠিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছিলেন। এই সাক্ষাৎকারটি তদন্তকারীদের বিশেষভাবে ভাবাচ্ছে। ইউটিউবে বহু দর্শক এই সাক্ষাৎকারটি দেখেছেন এবং এতে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন তদন্তকারীরা। এই সাক্ষাৎকার থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে কি না, তা নিয়েই তাঁরা গভীর তদন্ত করছেন।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে রবিবার হিসারের এক আদালতে পেশ করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও জ্যোতির যাবতীয় দোষ মানতে নারাজ তার বাবা হরিশ মালহোত্রা। তাঁর মেয়ে কাজের সূত্রেই পাকিস্তানে গিয়েছিল বলে তিনি করেছেন দাবি। তাঁর কথায়, “আমার মেয়ের কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল। কোনও অপরাধের সঙ্গে জ্যোতির যোগ নেই।” দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর আগে জ্যোতির বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর থেকে মেয়েকে নিয়ে হিসারের নিউ অগ্রসেন কলোনিতে বসবাস করেন হরিশ৷ আগে অল্প বিস্তর কিছু কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশ কিছু বছর আগে সমস্ত কিছু বন্ধ করে দেন। তিনি আশাবাদী যে, তদন্তে আসল সত্য উদঘাটন হবে৷
দেখুন আরও খবর: