নয়াদিল্লি: বিচারপতি নিয়োগ পদ্ধতি প্রকাশ্যে আনল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়ামের সুপারিশ সংক্রান্ত তথ্যও সামনে এল। সুপ্রিম কোর্ট ছাড়াও হাইকোর্টগুলিতে (High Court) কীভাবে বিচারপতি নিয়োগ হয়, সেই সম্পূর্ণ পদ্ধতি ওয়েবসাইট মারফত জনগণের জ্ঞাতার্থে ও সচেতনতার স্বার্থে সামনে আনল সুপ্রিম কোর্ট।
২০২২ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৫ মে পর্যন্ত হাইকোর্ট বিচারপতিদের নিয়োগ সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের (Supreme Court Collegium) প্রস্তাব ও অনুমোদন তথ্য প্রকাশ্যে এল। প্রার্থী নিম্ন আদালত থেকে পদোন্নতি পেয়ে নাকি হাইকোর্টের আইনজীবী থেকে বিচারপতি হয়েছেন, সেই তথ্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশের তারিখ, বিচার মন্ত্রকের নির্দেশিকার তারিখ, নিয়োগের তারিখ, প্রার্থী তফসিলি জাতি/উপজাতি/অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি বা মহিলা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন কি না, সেই প্রার্থীর সঙ্গে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতির আত্মীয়তা আছে কি না, সেইসব তথ্যও ওয়েবসাইটে মিলবে।
আরও পড়ুন: বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি গুরুত্ব পায়:
১. মেধা এবং সততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
২. ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সি আইনজীবীদের বিচারপতি পদে সুপারিশ করা হয়। প্রশ্নাতীত মেধার ক্ষেত্রে অনেক সময় ছাড় দেওয়া হয়।
৩. বিগত ১০ বছর ধরে আয়কর প্রদানকারী হতে হয়। যদি না কোনও কারণে আয়করে ছাড়ের সুযোগ থাকে।
৭. সুপারিশ পাওয়ার পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের পেশাগত বার্ষিক আয় ন্যূনতম সাত লক্ষ টাকা হতে হয়।
৮. আইনজীবী হিসেবে লড়ে জেতা পর্যাপ্ত সংখ্যক মামলার রায় আইনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে থাকতে হবে।
৯. জনকল্যাণে, বিনামূল্যে বা আইনজীবী হিসেবে আদালতে অবৈতনিক কাজে যুক্ত থাকার ইতিহাস বাঞ্ছনীয়।
১০. শুনানিতে ধারাবাহিকভাবে আইনজীবী হিসাবে উল্লেখযোগ্য অবদানের ইতিহাস থাকা দরকার।
১১. পদোন্নতির মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় অফিসারদের বয়স সুপারিশের সময় ৫৮ বছর ছয় মাসের মধ্যে থাকতে হবে।
১২. জুডিসিয়াল অফিসারদের সিনিয়রিটি অনুযায়ী যোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
১৩. মহিলা এবং সমাজের প্রান্তিক বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করা ও সামাজিক কাজে যুক্ত থাকার ইতিহাস দেখা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়গুলি:
১. হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অথবা কোনও বিচারপতি বা বিশিষ্ট আইনজীবী অথবা ‘জুরিস্ট’দের নিয়োগ করা হয়।
২. কোনও হাইকোর্টের বিচারপতি বা প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব হাইকোর্টের প্রতিনিধিত্বের অনুপাত দেখা হয়।
৩. হাইকোর্ট বিচারপতির সিনিয়রিটি নিয়োগে গুরুত্ব পায়।
৪. মেধা ও সততা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন কত সংখ্যক মামলার নিষ্পত্তির ইতিহাস রয়েছে, তা বিবেচিত হয়।
৬. মামলার নিষ্পত্তির হারের সঙ্গে দেওয়া রায়ের গুণমান, মামলার জটিলতার ইতিহাস এবং আদালতের ভার বহনের ক্ষমতা দেখা হয়।
তবে এসবের পাশাপাশি প্রার্থীর আইবি রিপোর্ট, কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত, প্রার্থীর বায়োডাটা সংক্রান্ত তথ্য গুরুত্ব পায়।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ৩০৩ জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম ১৭০ জনের নিয়োগ অনুমোদন করেছে। যাঁদের মধ্যে সাতজন তফসিলি জাতি, পাঁচজন তফসিলি উপজাতি, ২১ জন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির, ২৮ জন মহিলা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে ২৩ জন, ১২ জন কোনও বিচারপতির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সাতজন অত্যন্ত পিছিয়ে থাকা শ্রেণির সদস্য।
দেখুন অন্য খবর: