নয়াদিল্লি: স্ত্রী সহ তিন কন্যাকে পুড়িয়ে মারায় অভিযুক্তকে মুক্তির নির্দেশ বহাল রইল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। সিআরপিসি (CrPc) বা ফৌজদারি আইনের ৩১৩ ধারা সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় এবং নিম্ন আদালত বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এমন অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এমন ত্রুটির দিকে কঠোর নজরদারির জন্য হাইকোর্টগুলিকে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি অভয় এস ওকা, বিচারপতি পঙ্কজ মিথল ও বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহ’র অভিমত, নিঃসন্দেহে ঘটনাটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। যেখানে অভিযুক্ত তার স্ত্রী ও তিন কন্যাকে আগুনে পুড়িয়ে মারে। কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত আইনি প্রমাণের অভাবে হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশে হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
২০০৮ সালে আমিনা ও তাঁর তিন কন্যা আমিনার স্বামী হাসিম শেখ ও এক আত্মীয় আসমানের লাগানো আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয় ও মারা যায়। হাসিমের নাবালক পুত্র এবং মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে দুই কন্যার দেওয়া বয়ানের ভিত্তিতে ২০১৪ সালে হাসিমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়নিম্ন আদালত। কিন্তু ২০১৫ সালে হাইকোর্ট হাসিমকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ সরকার (UP Government) এবং আমিনার ভাইয়ের আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন: পহেলগাঁও কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে দুই মিনিট নীরবতা পালন সুপ্রিম কোর্টে
সুপ্রিম কোর্টের অভিমত, দুটি মেয়ের মৃত্যুকালীন জবানবন্দির উপর পুলিশ ভীষণভাবে ভরসা রেখেছে। অথচ সিআরপিসির ৩১৩ ধারা অনুযায়ী সেই বয়ান অভিযুক্তকে দেওয়া হয়নি বা তাকে জানানো হয়নি। ফলে সেই অভিযোগ সম্পর্কে সাফাই দেওয়ার সুযোগ অভিযুক্ত পায়নি। যা তার বিপক্ষে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এই ত্রুটির কারণে অভিযুক্তের বিচারের ক্ষেত্রে ওই বয়ান দুটির কোনও কার্যকারিতা নেই। দ্বিতীয়ত অভিযুক্তের নাবালক পুত্রের বয়ান যাচাই করার প্রয়াস নেয়নি নিম্ন আদালত। তাকে কোনও প্রশ্নই করা হয়নি। সে বিষয়টি আদৌ বুঝছে কি না, তাও যাচাই করা হয়নি। ফলে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের কোনও সুযোগ নেই।
এখন নতুন করে ৩১৩ ধারা অনুযায়ী বিষয়টিকে বিচার করার জন্য পাঠানোর কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারণ সে ক্ষেত্রে বিষয়টি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যাবে। এমন অভিমত দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করল সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রেক্ষাপটে এমন মামলার ক্ষেত্রে ৩১৩ ধারা অনুযায়ী নিম্ন আদালতে প্রক্রিয়াকরণ হয়েছে কি না, তা হাইকোর্টগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হল। যদি এমন খামতি দেখা যায়, তাহলে হাইকোর্ট প্রথমেই নিম্ন আদালতকে সেই মতো ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেখুন অন্য খবর: