নয়াদিল্লি: আদানি-কাণ্ডে (Adani) সেবির (SEBI) তদন্তের উপরই আস্থা রাখল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, এই তদন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটির তত্ত্বাবধানে চলবে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভয় মনোহর সাপ্রের নেতৃত্বে গঠিত হবে এই কমিটি। তার বাকি সদস্যরা হলেন, ও পি ভাট, বিচারপতি জে পি দেবধর, কে ভি কামাট, নন্দন নিলেকার্নি এবং সোমশেখর সুন্দরেশন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, এই বিশেষজ্ঞ কমিটি সেবির তদন্তে কোনওবাবেই নাক গলাবে না। বর্তমানে সেবির যে নিয়ম-কানুন আছে, সেগুলিকে আরও কীভাবে শক্তিশালি এবং কঠোর করা যায়, সে ব্যাপারে দিশা দেখাবে। প্রয়োজন হলে এই কমিটি বিভিন্ন সুপারিশও করতে পারে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার উপরই জোর দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন শেয়ার গবেষণা সংস্তা হিন্ডেনবার্গ ২৫ জানুয়ারি তাদের এক রিপোর্টে জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী কারচুপি ও জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের শেয়ার অনেক বাড়িয়ে দেখিয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই আদানি গোষ্ঠীর নানা সংস্থার শেয়ার পড়তে থাকে। বাজারে তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
আরও পড়ুন:Adenovirus: অ্যাডিনোর আতঙ্কে কাঁপছে রাজ্য, মৃত্যু সংখ্যা ৫০ ছুঁই ছুঁই
২৪ জানুয়ারি আদানিদের তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির মোট শেয়ার মূল্য বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছিল ১৯ লক্ষ কোটি টাকা। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ঠিক এক মাস পরে ওই ১০ কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়িয়েছে ৭.২ লক্ষ কোটি টাকা।মাত্র এক মাসে আদানিদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন (Market Capitalization) কমেছে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। লগ্নিকারীদের আস্থা ফিরে পেতে আদানিরা নানা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, এই সপ্তাহে একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় (Guardian) প্রকাশিত হয়েছে শুধু ভারতে নয় অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দারাও উদ্বেগে রয়েছে। কারণ, সেখানকার প্রবীণদের অবসরকালীন সঞ্চয় বিনিয়োগ করা হয়েছে আদানিদের কোম্পানিতে। তা নিয়ে এখন তাঁরা উদ্বেগে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ওই রিপোর্ট ভিত্তিহীন। ভারতের আইন না মেনে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ইস্যুতে সংসদের ভিতরে ও বাইরে বিরোধীরা প্রবল শোরগোল তোলে। কংগ্রেস সহ বেশকিছু বিরোধী দল গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি জানায়। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও দাবি করেছিল সংসদে। যদিও হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটিও কথা বলেননি সংসদে। বিরোধীদের যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবিতে একমত হননি তৃণমূল।