নয়াদিল্লি: অবিবাহিত হওয়ার কারণে কোনও মহিলাকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না৷ বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টের রায় খারিজ করে এক অবিবাহিত তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ওই তরুণী ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা৷ এদিন রায় ঘোষণার সময় শীর্ষ আদালত দিল্লি এইমসকে ২ জনের বিশেষজ্ঞ দল গড়ার নির্দেশ দিয়েছে৷ সেই বিশেষজ্ঞ দল তরুণীর শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়ে জানাবে যে গর্ভপাতের ফলে তাঁর কোনও ক্ষতি হতে পারে কি না৷
গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন মণিপুরের বাসিন্দা ২৫ বছরের ওই তরুণী৷ আদালতকে তিনি জানিয়েছিলেন, সহমতের ভিত্তিতে নিজের সঙ্গীর সঙ্গে তিনি যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়েছিলেন৷ পরে তিনি সন্তানসম্ভাবা হয়ে পড়লে তাঁর সঙ্গী বিয়ে করতে অস্বীকার করেন৷ তখন গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেন ওই তরুণী৷ ততদিনে তাঁর গর্ভস্থ ভ্রুণের বয়স ২৩ সপ্তাহ ছুঁইছুঁই৷ দেশের আইন অনুযায়ী, গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত অবিবাহিত মহিলারা গর্ভপাত করাতে পারলেও দিল্লি হাইকোর্ট ওই তরুণীর আবেদন খারিজ করে দেয়৷ জানিয়েছিল, আদালত গর্ভপাতের অনুমতি দিলে তা গর্ভপাত আইনের পরিপন্থী বলে গণ্য হবে৷ ওই আইনে বলা আছে, সহমতের ভিত্তিতে সহবাসের পর কোনও মহিলা গর্ভবতী হয়ে পড়লে তিনি গর্ভপাত করাতে পারেন ঠিকই৷ কিন্তু গর্ভস্থ ভ্রুণের ২০ সপ্তাহ সময়সীমার মধ্যে সেটা করতে হবে৷ তাই দিল্লি হাইকোর্ট ওই তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি৷
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে যান ওই তরুণী৷ আদালতের কাছে আবেদনে তিনি জানান, এই সন্তানের কারণে পরবর্তীকালে তাঁকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হবে৷ সমাজে তাঁকে হেয় করে দেখা হবে৷ সর্বোপরি ওই সন্তান তাঁর মানসিক কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে৷ আদালতকে তিনি এটাও জানান, তাঁর বাবা-মা চাষবাসের সঙ্গে জড়িত৷ পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়৷ তাই তাঁর দায়িত্ব অনেক৷ তাছাড়া সন্তান বড় করার মতো আর্থিক সঙ্গতি তাঁর পরিবারের নেই৷ তরুণীর আবেদন খতিয়ে দেখার পর এদিন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ গর্ভপাতের অনুমতি দেয়৷ সেই সঙ্গে জানায়, হাইকোর্ট এব্যাপারে অযথা কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷