কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: এক কৃষকের ৩১ পয়সা ঋণ পরিশোধ বাকি থাকায় তাঁকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (NOC) দিতে অস্বীকার করে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (SBI)। ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে এহেন কড়া মনোভাবাপন্ন এসবিআই কর্তৃপক্ষ ফের একবার তাদের কাছে ১০০ কোটি টাকার উপর ঋণ নেওয়া ব্যক্তিদের নাম জানাতে অস্বীকার করল। শুধু তাই নয়, এসবিআইয়েরই এক শেয়ার হোল্ডারকেও তারা বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করল না। এই নিয়ে টানা মোট ৯ বছর ধরে এসবিআই ১০০ কোটির উপর ঋণগ্রহীতাদের নাম প্রকাশ্যে আনছে না। ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছর থেকে ২০২১-’২২ পর্যন্ত এভাবে বড় বড় অঙ্কের ধার নেওয়া ব্যক্তিদের নাম চেপে যাচ্ছে। যেখানে এই ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকারও বেশি। উদ্ধার হওয়া ঋণের পরিমাণ মাত্র ১৩ শতাংশের কিছু বেশি।
আরও পড়ুন: Partha-Arpita: ২২ কোটির মামলায় আজই আদালতে পেশ অর্পিতা-পার্থ
এসবিআইয়ের শেয়ার হোল্ডার তথা সমাজকর্মী বিবেক বেলঙ্কারকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রাহকের তথ্য-পরিচয় গোপন রাখতে তারা দায়বদ্ধ। সে কারণে তারা এ ব্যাপারে কোনও তথ্য দিতে অপারগ। অথচ এসবিআই এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, তারা ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের পরিচয় প্রকাশে কার্পণ্য করছে না। কেউ সময়মতো ঋণ পরিশোধ না-করতে পারলে, বিভিন্ন কাগজে তাঁদের ছবি-ঠিকানাসহ বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। কেবলমাত্র ধনকুবেরদের ঋণের পরিমাণ ও তাঁদের নাম প্রকাশেই যত অনীহা এসবিআইয়ের।
বেলঙ্কারসহ আরও অনেকে এসবিআই ছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে (RTI) আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁরা ব্যাঙ্কগুলির কাছে দেশের বিরাট বড় বড় ঋণখেলাপিদের নাম জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, গ্রাহকদের তথ্য গোপন রাখার শর্ত দেখিয়ে কেউই ঋণখেলাপি রাঘব বোয়ালদের নাম প্রকাশ্যে আনতে অনিচ্ছুক। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কেন ছোটখাট ঋণখেলাপিদের নাম-ছবিসহ কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে ছাপা হয়!
পুণের সজাগ নাগরিক মঞ্চের সভাপতি বেলঙ্কার বলেন, ২ বছর আগে এসবিআই আমাকে ২২৫ জন ঋণখেলাপির নাম জানায়। কিন্তু তার পর আর তারা তা জানাতে অস্বীকার করে। আমি জানতে চাই, গ্রাহকদের গোপনীয়তা সংক্রান্ত বিধি কি বছর বছর বদল হয়!