জলপাইগুড়ি: জলে জলমগ্ন জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)। জলবন্দি জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক এলাকা জলের তলায়। রাতভোর রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু জায়গায়। জলস্ফীতি তিস্তা, করলা, জলঢাকা। জলে টইটম্বুর জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে করলা নদী। ফলে নদীর নিচু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ১৩২.৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা এই বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। পাহাড়-সমতলে গত কয়েক দিন লাগাতার বৃষ্টির জেরে তিস্তা, জলঢাকা নদীতে লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দফতর। জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা করলা নদী এবার ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে পরেশ মিত্র কলোনি, নিচু মাঠ এলাকার বাসিন্দাদের।
আরও পড়ুন: Delhi Flood | যমুনার জলে ডুবন্ত দিল্লিতে আজ ফের ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে জলপাইগুড়ির বানারহাটে। প্রায় ২৯০ মিলিমিটার। মালবাজারে ১১৩ মিলিমিটার এবং হাসিমারায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেচ দফতর জানিয়েছে, তিস্তা জলঢাকা-সহ সব নদীতেই জল বাড়ছে। হাতিনালা উপচে পড়ে বানারহাটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নাগরাকাটায় ডায়না নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জল রাস্তায় জমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থা ভাল হলেও নিকাশি নালা সময় মতো পরিষ্কার না হওয়ায় রীতিমতো সমস্যা তৈরি হয়েছে। যার ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক জায়গা।
এদিকে আবহাওয়া দফতরের সূত্রে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা আগেই জারি করা হয়েছিল উত্তরবঙ্গে। জলে ভাসছে বাংলাদেশ-ভুটানের যোগাযোগ রক্ষাকারী এশিয়ান হাইওয়ে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে পূর্বাভাস আগে থেকেই দেওয়া ছিল। বুধবার রাত থেকে তাঁর প্রতিফলন দেখা যায় ডুয়ার্স-সহ জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসায়িক সংযোগের অন্যতম এশিয়ান হাইওয়ের এথেলবাড়ি সংলগ্ন রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল। যার ফলে ব্যহত হয়েছে স্বাভাবিক যাতায়াত। বীরপাড়ার সঙ্গে এথেলবাড়ির যোগাযোগও ভেঙে পড়েছে অতি বৃষ্টির কারণে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কুরিচু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধার থেকে টানা ৯ ঘণ্টা জল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে ভুটান সরকার। যার ফলে বিপদের মুখে পড়তে পারে অসমের অনেকগুলি জেলা। ভেসে যেতে পারে গ্রামের পর গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা টুইটারে লেখেন, ভুটান সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কুরিচু বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া হবে৷ আমরা জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছি।