ভোপাল: ফের খবরের শিরোনামে ভোপাল (Bhopal)। ভোপাল থেকে ইউনিয়ন কার্বাইডের (Union Carbide) বিষাক্ত বর্জ্যে (Dumping toxic waste ) নষ্ট করা নিয়ে উত্তপ্ত পিথমপুর (Pithampur)। উত্তেজনা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়ে নিয়েছে। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এই বর্জ্যে নষ্ট করা নিয়ে কোনও রকম দূষণ ছড়াবে না। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই কাজ করা হবে। কিন্তু এত আশ্বাসের পরে স্থানীয়রা প্রশাসনের কথা শুনতে নারাজ।
আজ সকালে ১২টি কন্টেনার পিথমপুরা পৌঁছতেই আগুনে ঘি পড়ে। চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভে নেমেছে স্থানীয়রা। পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক হয়ে ওঠে যে, দুই প্রতিবাদী নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাদের দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের ইনদওরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আজমের শরিফে ৮১৩ বছরে উরস উৎসব, চাদর পাঠালেন মোদি
বৃহস্পতিবার ভোপাল থেকে সরানো হয়েছে ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য। ৪০ বছর পর বিষমুক্ত হয়েছে ভোপাল। আগুন ধরবে না এবং কোনও অবস্থাতেই বাইরে বেরিয়ে আসবে না, এমন ১২টি কন্টেনারে ওই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সরানো হয়। সেগুলিকে পিথমপুরের বর্জ্য নিষ্কাশন প্ল্যান্টে নিয়ে আসা হয়। আর তার পরেই শুরু হয় উত্তেজনা।
পিথমপুর বাঁচাও সমিতি নামক একটি সংগঠনের দাবি, সরকার যতই পরিকল্পনা করে বর্জ্যে নষ্ট করার কথা বলুক, এর জন্য দূষণ হবে। এলাকার ক্ষতি হবে। মানুষের শরীরে এর প্রভাব পড়বে। যা আমরা হতে দিতে পারি না।
প্রতিবাদে শুক্রবার বনধের ডাক দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেন,সরকার চায় না মানুষের ক্ষতি হোক। সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আইনি অনুমতি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট পিথমপুরে বর্জ্য ধ্বংস করার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, আপনারা দয়া করে বিভ্রান্তিকর তথ্যে কান দেবেন। সমস্ত বৈজ্ঞানিক উপায়, বিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে সব বর্জ্য ধ্বংস করার প্রক্রিয়া চালানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা গ্যাস লিক করে। ঘুমের মধ্যেই অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অনেকে মারা যান। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭৮৭। কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর প্রভাবে নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষের। সেই আতঙ্ক মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে বয়ে বেড়াচ্ছে।
একাধিক বার কারখানা চত্বর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সরানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। বর্জ্য সাফাইয়ের জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তারপরেই বর্জ্য সরিয়ে নেওয়া হয়। বর্জ্য নষ্ট করতে সময় লাগবে ৯ মাস।
দেখুন অন্য খবর-