গুয়াহাটি: অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। মশাল হাতে দৌঁড়েছিলেন লন্ডনের রাজপথে। সেই মহিলা এখন চা বাগানের দিন মজুর। খেলাধূলো অনেক দূরের কথা। পেটের টানে দৈনিক ১৬৭ টাকা মজুরির ভিত্তিতে কাজ করতে হচ্ছে তাঁকে।
আরও পড়ুন- ‘আমার নয়, এই সোনা গোটা দেশের’, সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে বললেন নীরজ চোপড়া
আলোচিত মহিলা হলেন পিঙ্কি কর্মকার। উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসমের বাসিন্দা তিনি। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের হয়ে মশাল হাতে দৌঁড়েছিলেন তিনি। চা বাগানের শ্রমিক রাজেন কর্মকারের মেয়ে লন্ডনের রাস্তায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছে। যা ঘিরে উন্মাদনা ছিল ডুব্রুগড়ে। স্থানীয় বরবরুয়া গার্লস স্কুলেও ছিল সাজো সাজো রব। কারণ সেই সময়ে ও স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন পিঙ্কি।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের জন্য মাত্র ৭২ সেকেন্ড কভারেজ, এলএসটিভি ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মহুয়া
সেই উন্মাদনা এখন আর নেই। বাবা রজেন অসুস্থ। তাই সংসার চালাতে বাবার মতোই চা বাগানে শ্রমিকের কাজ শুরু করেছেন পিঙ্কি। সেদিনের সেই ১৭ বছরের পিঙ্কি এখন অনেকটাই বড় হয়েছেম বাস্তব বুঝতে শিখেছেন। তবে স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার দুঃখ থেকেই গিয়েছে। পিঙ্কির কথায়, “২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতের হয়ে মশাল নিয়ে দৌঁড়েছিলাম। এখন আমি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে চা বাগানে কাজ করি। জানি না কেন সরকার থেকে আমি কোনও সহযোগিতা পেলাম না! আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন- কাবুলে রেডিও স্টেশন ম্যানেজারকে হত্যা, সাংবাদিক অপহরণ তালিবানের
বাবা চা বাগানের নিম্ন শ্রেণীর শ্রমিক ছিলেন। তাই খেলাধূলো করার জন্য যে সকল সামগ্রী প্রয়োজন তা জোগাড় করতে পারেননি পিঙ্কি। আশা ছিল মিলবে সরকারি সাহায্য। কিন্তু সেই আশাও একদিন ছাড়তে হয়েছিল। তাই এখন বাবার কাজটাই করতে শুরু করেছেন তিনি। তবে সুযোগ পেলে তিনিও করে দেখাতে পারতেন। এমনই দাবি করেছেন পিঙ্কি। তাঁর কথায়, “সুযোগ পেলে আমি অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতাম। আমার পরিবারের পক্ষে সেই খরচ জোগাড় করা সম্ভব ছিল না।”
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই জাতিপুঞ্জের হয়ে কাজ করতেন পিঙ্কি কর্মকার। চা বাগানের মহিলাদের উন্নয়নের নানাবিধ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। সেই সুবাদেই লন্ডন যাত্রার সুযোগ মিলেছিল। ইউনিসেফ-র উদ্যোগে ভারতের হয়ে মশাল হাতে লন্ডনের রাস্তায় দৌঁড়েছিলেন পিঙ্কি।