নয়াদিল্লি: এক নাইজেরিয়ান মহিলাকে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে ২০ বছরের কারাবাসের সাজা দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। রায়ে বলা হয়েছে বীর্যের নমুনা না থাকায় অভিযোগকারিণীর দাবি মিথ্যে হয়ে যায় না। ‘পেনিট্রেশন’ (Penetration) অর্থাৎ লিঙ্গ প্রবেশ করানোই ধর্ষণের যথেষ্ট প্রমাণ। প্রথমে দুইজনকেই ৩০ বছরের কারাবাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা কমিয়ে ২০ করা হয়। আদালত জানায়, একজন অবিবাহিত, অন্যজনের সন্তান এবং বাবা-মায়ের দেখাশোনা করতে হবে। তা ছাড়া দুজনের সংশোধিত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বিচারপতি মুক্তা গুপ্তার (Justice Mukta Gupta) নেতৃত্বাধীন একাধিক ডিভিশন বেঞ্চের (Division Bench) তরফে দেওয়া ৬৫টি রায়ের একটি এল এই সোমবার। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই অবসর নিয়েছেন বিচারপতি। ২০০৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মুক্তা গুপ্তা, ২০১৪-র ২৯ মে স্থায়ী বিচারপতি পদে উন্নীত হন।
আরও পড়ুন: Amit Malviya | রাহুলকে ব্যঙ্গ করে টুইট, অমিত মালব্যর বিরুদ্ধে এফআইআর কংগ্রেসের
অভিযুক্ত রাজ কুমার এবং দীনেশকে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রায়াল কোর্ট এবং ৩০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানালেও তা খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। বিচারপতি মুক্তা গুপ্তা এবং বিচারপতি পুনম এ বাম্বার (Justice Poonam A Bamba) বেঞ্চ বলে, যা প্রমাণাদি হাতে আছে তার বিচারে অভিযোগকারীর দাবি শুধু সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য তা-ই নয়, ঘটনা এবং পরিস্থিতিও তাকে সমর্থন করে। তাই দোষী সাব্যস্ত করার রায়ে আদালত কোনও ভুল দেখতে পাচ্ছে না।
ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪ সালের ১৮-১৯ জুনের রাতে। বন্ধুর বাড়ির পার্টি থেকে দিল্লির জনকপুরিতে নিজের আবাসস্থলে ফিরছিলেন ওই নাইজেরীয় নাগরিক। অটোর খোঁজ করছিলেন তিনি, সেই সময় গাড়ি তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায় এবং অভিযুক্ত দু’জন নাইজেরীয় মহিলাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয়। একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে তারা। অপরাধ সংঘটিত করার পর ওই মহিলাকে ফের গাড়িতে করে একটি মেট্রো স্টেশনের পিলারের সামনে ফেলে দিয়ে যায়।
পুলিশের কাছে যান নাইজেরিয়ান মহিলা। তাঁর বর্ণনার ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তরা দাবি করে, ভুল লোককে ধরেছে পুলিশ, ধর্ষণ তারা করেনি, অন্য কেউ করেছে। ডিএনএ পরীক্ষার ফল ধর্ষণের অভিযোগ সমর্থন না করায় অভিযোগকারীর দাবি আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। কিন্তু আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, বীর্যের নমুনা না থাকায় অভিযোগকারিণীর দাবি মিথ্যে হয়ে যায় না। ‘পেনিট্রেশন’ অর্থাৎ লিঙ্গ প্রবেশ করানোই ধর্ষণের যথেষ্ট প্রমাণ।