নয়াদিল্লি: আদালতে আবেদন জানানোর আগে আবেদনকারীরা ব্যক্তিগতভাবে এফআইআর দায়েরের কোনও চেষ্টা করেননি কেন? ২০১৯ সালে পেগাসাসের (Pegasus) মাধ্যমে আড়িপাতার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসা সত্ত্বেও এতদিন কী কারণে পিটিশন দাখিল করা হয়নি? পেগাসাস স্পাইওয়্যার সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদনের শুনানি চলাকালীন বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিমকোর্ট (Supreme Court)।
আরও পড়ুন: BREAKING: পেগাসাস আড়িপাতা কাণ্ডে কেন্দ্রের বক্তব্য শুনতে চায় সুপ্রিমকোর্ট
পেগাসাস আড়িপাতা কাণ্ডে (Snoopgate) মামলাকারীদের তাঁদের আবেদনের কপি কেন্দ্রকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ অগস্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। অভিযোগ সঠিক হলে সত্য সামনে আসবেই। কেন্দ্রের প্রতিনিধি ছাড়া মামলা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় না দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সে কারণেই পিটিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবেদনের কপি কেন্দ্রকে জমা দিতে হবে।
মামলা দায়েরে দেরি হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমারের আইনজীবী কলিল সিব্বল আদালতে দাবি করেন, সিটিজেন ল্যাব নামক একটি সংস্থা সম্প্রতি পেগাসাস সংক্রান্ত তথ্য সামনে এনেছে। সে কারণেই আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এর আগে এই সংক্রান্ত অন্য রিপোর্ট প্রকাশ্যের আসলেও তা আমাদের জানা ছিল না। অন্যতম পিটিশনার সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে সরকার কী করে, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: BREAKING: পেগাসাস আড়িপাতা কাণ্ডে রাজ্য তদন্ত কমিশনের কাজ শুরু
সুপ্রিমকোর্টের পর্যবেক্ষণ, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এডিটর’স গিল্ড ছাড়া অন্য কারও আবেদনে তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। শুধুমাত্র সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা হয় না। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছে আদালত।
পেগাসাস নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। বিশ্বের ১৭টি সংবাদ সংস্থা তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তথ্যভাণ্ডার প্রকাশ্যে এনেছে। এই নম্বর গুলিতে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফোনে কী কথাবার্তা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে কী আদান-প্রদান হয়েছে, ফোনে কী তথ্য, নথি, ছবি রয়েছে সেটাও দেখা হয়েছে। অথচ যাঁর মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে, তিনি জানতেই পারেননি।
আরও পড়ুন: ১০০ সাংসদকে নিয়ে ‘ব্রেকফাস্ট পে চর্চা’য় রাহুল, ‘মেনু’তে পেগাসাস
দেশীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়ারে’র রিপোর্টে প্রকাশ, এই পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ভারতের সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মী, বিচারপতিদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটা সরকারই করেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
কিন্তু, পেগাসাস স্পাইওয়্যার সরকার কিনেছিল কি না তা স্পষ্ট করছে না। অথচ, পেগাসাস স্পাইওয়্যার নির্মাণ সংস্থা এনএসও-র বক্তব্য, শুধুমাত্র সন্ত্রাসী এবং শিশু যৌন নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী বা মানব পাচারকারীদের মত গুরুতর অপরাধীদের নজরদারি করার শর্তেই নির্বাচিত সরকারকে এই সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের কেন দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্ন আদালতের