ওয়েবডেস্ক- ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে (Israel-Iran conflict) ভারতীয় নাগরিক (Indian Citizen) সহ শিক্ষার্থীদের (Student) দেশে ফেরাতে ‘অপারেশন সিন্ধু’ (Operation Sindhu) শুরু করল ভারত সরকার (India Government)। ইরানে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে এই কর্মসূচি নিয়েছে মোদি সরকার। যার নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরান থেকে আর্মেনিয়া হয়ে ১১০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে প্রথম বিমানটি (First Fligh) বৃহস্পতিবার ভোরে নিরাপদে দিল্লিতে (Delhi) অবতরণ করেছে।
যুদ্ধে আবহে সেখানে টেনশনে রয়েছে ভারতীয় পড়ুয়ারা। এই আবহে পরিবারের তরফে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মোদি সরকারে কাছে আবেদন জানানো হয়। এর পরে সরকারের তরফে শুরু হয় অপারেশন সিন্ধু। সমস্ত পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে ফিরতে পারেন, পুরো বিষয়টি দেখছে তেহরানের ভারতীয় দূতবাস। ১১০ জন শিক্ষার্থীকে তেহরান থেকে সফলভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং স্থলপথে আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করানো হয়েছে। দেশের মাটিতে পা রেখে ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পড়ুয়ারা।
ভার্তা নামে কাশ্মীরের এক ছাত্র বলেন, “ইরান থেকে আমাদেরই প্রথম আনা হল। পরিস্থিতি বেশ সংকটজনক। আমরা আতঙ্কিত ছিলাম। আমরা ভারত সরকার এবং ভারতীয় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানাই যারা খুব দ্রুত এবং দ্রুততার সঙ্গে আমাদের এখানে নিয়ে আসার জন্য কাজ করেছে। আর্মেনিয়ান কর্তৃপক্ষও খুব সাহায্য করেছে।
আরও পড়ুন- ইরান থেকে ভারতীয় নাগরিক সহ পড়ুয়াদের ফেরাতে শুরু করল ভারত
অপর এক পড়ুয়ার কথায়, দেশে ফিরতে পেরে খুব খুশি। উর্মিয়াতে আমরা এমন কোনও ঘটনা দেখিনি, তবে ইরানের অন্যান্য জায়গায় পরিস্থিতি খারাপ ছিল। ভারত সরকার অনেক সাহায্য করেছে, যার কারণে আমরা দেশে ফিরে এসেছি। আমি আমি উর্মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস শেষ বর্ষের ছাত্র। আমরা ড্রোন এবং মিসাইল দেখেছি। খুব ভয়েতে ছিলাম। আমরা ভারত সরকার, ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পরিরাব খুব চিন্তায় ছিল।
এমবিবিএস ছাত্র মীর খলিফ বলেন, ইরানে পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। আমরা ক্ষেপণাস্ত্র দেখতে পাচ্ছিলাম। যুদ্ধ চলছিল। আমাদের আশেপাশে বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে আমরা খুব ভীত ছিলাম। খলিজ বলেন, ইরানে এখনও কিছু শিক্ষার্থী আটকে আছে। তাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। আমরা আশা করি শীঘ্রই তাদের বিমানে ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ।
আরেক ভারতীয় ছাত্র আলী আকবর বলেন, বাসে ভ্রমণের সময় তারা একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি ড্রোন পড়তে দেখেন। খবরে যে পরিস্থিতি দেখানো হয়েছে তা সঠিক। এটি অত্যন্ত খারাপ। তেহরান ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইরান থেকে সরিয়ে নেওয়া একজন ভারতীয় ইয়াসির গাফফার বলেন, “আমরা ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পড়তে দেখেছি এবং রাতে তীব্র শব্দ শুনতে পেয়েছি। ভারতে পৌঁছাতে পেরে আমি খুশি। আমি আমার স্বপ্ন ছেড়ে দেইনি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে, আমরা ইরানে ফিরে যাব।
বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং (Minister of State for External Affairs Kirti Vardhan Singh) বলেন, আরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে বিমান প্রস্তুত আছে। আমরা আজ আরও একটি বিমান পাঠাবো। আমরা তুর্কমেনিস্তান থেকে আরও কিছু লোককে সরিয়ে নিচ্ছি। আমাদের মিশনগুলি যেকোনও ধরনের সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধের জন্য ২৪ ঘন্টা লাইন খুলে দিয়েছে।
পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে, আমরা ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য আরও বিমান পাঠাব। তিনি তুর্কমেনিস্তান এবং আর্মেনিয়ার সরকারকে তাদের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
দেখুন আরও খবর-